Advertisement
E-Paper

মোদী-মমতাকে বিঁধেই পথে সরব ইয়েচুরিরা

কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক উপলক্ষে সোমবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশের আয়োজন করেছিল কলকাতা জেলা সিপিএম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:৫২
Many CPM leaders are present in a program

সিপিএমের সমাবেশে সীতারাম ইয়েচুরি ও মহম্মদ সেলিম। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘গণ-বিক্ষোভ’ তৈরি করার ডাক দিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। প্রশ্ন তুললেন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মাঝেমধ্যেই অবস্থান বদল ঘিরে। মহম্মদ সেলিম সরব হলেন বিজেপি-শাসিত এবং তৃণমূলের সরকারের আমলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কলকাতায় সমাবেশ করে বিজেপি ও তৃণমূলকে একসঙ্গেই নিশানা করল সিপিএম। বিজেপি ও তৃণমূল অবশ্য আবার সিপিএমকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে।

কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক উপলক্ষে সোমবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশের আয়োজন করেছিল কলকাতা জেলা সিপিএম। শহরের ৯টি জায়গা থেকে মিছিল করে সভাস্থলে আসেন সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা। সিপিএম প্রতিষ্ঠার সময়ের ৯ জন পলিটব্যুরো সদস্যের (যাঁদের ‘নবরত্ন’ বলা হয়) নামে এক একটি ‘ব্রিগেড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল মিছিলগুলিকে। দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি, রাজ্য সম্পাদক সেলিম, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা সকলেই বিভিন্ন মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন। ইয়েচুরি ছিলেন ‘জ্যোতি বসু ব্রিগেডে’। কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক সদস্যও এ দিন শামিল হয়েছিলেন শহরের রাজপথে নানা মিছিলে। সমাবেশে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতোই।

কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করে সমাবেশে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াইকে জোরদার করতে হবে। গণ-বিক্ষোভ তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গেই সংবিধানকে ধ্বংস করা, ঘৃণা ছড়ানোর রাজনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামও জরুরি। এই কাজ করতে পারেন বামপন্থীরাই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্বাধীনতার পরে কোনও সরকারের আমলে দেশের ও মানুষের সম্পদের এত লুট কখনও হয়নি!’’ সাম্প্রতিক রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৃষ্টান্ত টেনে ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল এক সময়ে এনডিএ সরকারের শরিক ছিল। এখনও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তারা অবস্থান বদলে ফেলে। বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের এই সম্পর্কের রহস্যটা কী?’’

তৃণমূলের নেতা সুখেন্দু শেখর রায় অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘অবস্থানে অনড় যদি কেউ থাকেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কী হয়েছে, তা দেশের মানুষ দেখেছে। বিরোধী ঐক্য তৈরি না হওয়ার দায় কারও থাকলে তা আছে কংগ্রেসের। আর সিপিএম এখন তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে। দ্বিচারিতা তো ওদের!’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘গোটা বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে দেখছে, একমাত্র দেশ হিসেবে ভারতে অর্থনৈতিক মন্দার কোনও সম্ভবনা নেই। এখন ধর্ম মানে গণতন্ত্র, রাজনীতি মানে উন্নয়ন। তাই বাংলার মানুষ সিপিএমকে বিধানসভায় শূন্য করে বিশ্রামে পাঠিয়েছে!’’

সেলিমের অভিযোগ, মোদীর সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করছে আর এখানে তৃণমূলের রাজ্যে সরকারি জমি বেচে দেওয়া হচ্ছে, জনজাতিদের জমি তুলে দেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর হাতে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মধ্যপ্রদেশের ব্যপম কেলেঙ্কারির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে যে বিজেপি-আরএসএস, তাদের কাছে এই বাংলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা শুনতে হবে? তৃণমূলের নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে অন্যতম লাভবান তো আগে শুভেন্দু অধিকারীও!’’ তৃণমূলের সুখেন্দু যদিও পাল্টা বলেছেন, ‘‘ইয়েচুরিরা স্পষ্ট করে বলুন, কোথায় জনজাতিদের স্বার্থ নিয়ে তৃণমূল সরকার সমঝোতা করেছে? আসলে মমতার খুঁত ধরতে গিয়ে দলটাই উঠে যাচ্ছে, সে দিকে নজর নেই!’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেবলীনা হেমব্রম সমাবেশে বলেছেন, ‘‘বামেরা ৩৪ বছর সরকারে ছিল। কোনও নেতা বা মন্ত্রীকে চুরির দায়ে হাজতে নিয়ে যেতে পারেনি সিবিআই বা কোনও তদন্তকারী সংস্থা। মাথা উঁচু করেই লড়ছি!’’ দলের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদারের দাবি, ‘‘আমরা ভুল-ভ্রান্তি করেছিলাম। কিন্তু বাংলার এই অবস্থা ছিল না। এখন মহল্লায় গেলে মানুষ এগিয়ে এসে এই কথাই বলছেন।’’

CPM Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy