Advertisement
E-Paper

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আছি: কেন্দ্রের সহযোগিতা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রী জানান, সব হিসেব উল্টে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০৩:৪৯
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত দক্ষিণবঙ্গে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একের পর এক জেলা থেকে বিপর্যয়ের খবর শুনে বুধবার রাতে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীকে দৃশ্যত বিধ্বস্ত দেখায়। সমগ্র দেশবাসীর কাছে সাহায্যের জন্য আর্জি জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে এই ঝড়কে না দেখে মানবিকতার দিক দিয়ে দেখুন। এখন রাজনীতি দূরে থাক। বাংলাকে ধ্বংস থেকে উন্নয়নের পথে ফের দাঁড় করাতে হবে। সবার সহযোগিতা চাইছি।’’ রাজনৈতিক সূত্রের খবর, রাজ্যের পরিস্থিতি জানতে মমতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন সনিয়া গাঁধী।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, সব হিসেব উল্টে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কারও ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পুরোটা বাংলার উপর দিয়ে গেল। করোনার জন্য অর্থনীতির অবস্থা শেষ। তার পর এই দুর্যোগ। কোনও রোজগার নেই। পুনর্গঠন করতে অনেক টাকা লাগবে।’’ বিপর্যয়ের বিবরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এলাকার পর এলাকা ধ্বংস। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছে। ১৭৩৭ সালে এমন ভয়ঙ্কর ঝড় হয়েছিল। ওয়ার রুমে বসে আছি আমি। নবান্নে আমার অফিস কাঁপছে। একটা কঠিন পরিস্থিতির যুদ্ধকালীন মোকাবিলা করলাম। মাঝরাত পর্যন্ত হয়তো ঝঞ্ঝা চলবে। নন্দীগ্রাম, রামনগর এলাকায় বড় ক্ষতি। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা প্রায় ধ্বংস ঝড়ের দাপটে। মোট ক্ষতি এখনও হিসেব করা যায়নি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর— সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা, হাবড়া— সব জায়গাই বিপর্যস্ত।’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

এ দিন তিনি রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রমের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন কলকাতায় আছি। এমন ঝড় দেখিনি। সব শেষ করে দিয়ে গেছে। ১০-১২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিস্তারিত খবর পেতে সময় লাগবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ১৭৩৭ সালে এমন দুর্যোগ হয়েছিল। তখন অনেক মানুষের জীবনহানি হয়েছিল। এ বার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার ফলে জীবনহানি অনেকটা কম। তবে বাঁধ ভেঙেছে, সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন এলাকার পরে এলাকা। বাড়ি ভেঙেছে, গাছ পড়েছে, বহু এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে সরকারি কর্মীদের পৌঁছতে সময় লাগবে বলে জানান মমতা। বৃহস্পতিবার টাস্ক ফোর্সের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে ত্রাণের কাজে নামবে প্রশাসন।

মুখ্যমন্ত্রী আপাতত ত্রাণ শিবির থেকে বাড়ি যেতে বারণ করেন। তিনি জানান, ঝড়ের গতিপথ বদলে গিয়েছে। কলকাতার উপর ১৩৫/১৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে গেছে। নবান্নেও অনেক কিছু ভেঙে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিঘা ও হাতিয়া দ্বীপের মাঝে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিমুখ বদলে তা সাগরে প্রথম আঘাত হানে। সেখান থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা হয়ে কলকাতায় আসে ঘূর্ণিঝড়। হাবড়া, বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে। এত বড় আকার ছিল যে যাওয়ার পথে সব শেষ করে দিয়ে গিয়েছে। খুব মন খারাপ। আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।’’

Cyclone Amphan Cyclone Mamata Banerjee Nabanna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy