Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মেয়ের বিয়ে বা ছেলের পৈতে, ডালিম জেলেই

আগামী রবিবার মেয়ের বিয়ে। সোমবার ছেলের উপনয়ন। কিন্তু বাবা থাকতে পারছেন না। লালগড়ের ধরমপুরের বাড়িতে যখন ওই দু’টি অনুষ্ঠান হবে, তখন প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসেই হয়তো মনে মনে আশীর্বাদ জানাতে হবে সিপিএম নেতা ডালিম পাণ্ডেকে।

সুরবেক বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৭ ০৪:৩১
Share: Save:

আগামী রবিবার মেয়ের বিয়ে। সোমবার ছেলের উপনয়ন। কিন্তু বাবা থাকতে পারছেন না। লালগড়ের ধরমপুরের বাড়িতে যখন ওই দু’টি অনুষ্ঠান হবে, তখন প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বসেই হয়তো মনে মনে আশীর্বাদ জানাতে হবে সিপিএম নেতা ডালিম পাণ্ডেকে। তিন দিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পেতে তিনি আবেদন করেন। প্রথমে মেদিনীপুর আদালত, তারপর শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে।

নেতাই গণহত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ডালিম ২০১৪-র মে থেকে জেলে। ২০১১-র জানুয়ারিতে নেতাই গণহত্যার সময়ে ডালিম ছিলেন ধরমপুরে দলের লোকাল কমিটির সম্পাদক। তিনি লালগড়ে সিপিএমের একদা শীর্ষনেতা অনুজ পাণ্ডের তুতো ভাই। নেতাইয়ের ঘটনার পর ডালিম পালিয়ে যান। ২০১৪-র ৩০ এপ্রিল হায়দরাবাদ থেকে ডালিম-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।

নেতাই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। তাদের কৌঁসুলি মহম্মদ আশরাফ আলি রবিবার বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার রায় ও বিচারপতি অমিতাভ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ ডালিম পাণ্ডের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।’’

আশরাফ আলি বলেন, ‘‘আমাদের বক্তব্য ছিল, ঘটনার পর অভিযুক্ত তিন বছরেরও বেশি সময় পালিয়ে ছিলেন। জামিনে মুক্তি পেলে তিনি ফিরে আসবেন, তার নিশ্চয়তা কোথায়?’’ আশরাফ আলি জানান, ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, প্যারোলে মুক্তি পেতে চাইলে অভিযুক্তকে উপযুক্ত জায়গায় আবেদন করতে হবে। সিবিআইয়ের কৌঁসুলির বক্তব্য, সাধারণত প্যারোলে মুক্তির আবেদন করতে পারেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরা। ডালিম বিচারাধীন বন্দি।

৮ এপ্রিল মেদিনীপুরের পঞ্চম অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আভা খান ডালিমের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তির আর্জি খারিজ করে দেন। অভিযুক্তের আইনজীবী রঘুনাথ ভট্টাচার্য জানান, তাঁর মক্কেলের একমাত্র মেয়ের বিয়ে ৭ মে, পরদিন ছেলের উপনয়ন। তাই, ৬ থেকে ৮ মে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তির আবেদন করা হয়। ওই আদালতে সিবিআইয়ের কৌঁসুলি পার্থসারথি দত্ত জানান, কলকাতা হাইকোর্ট মার্চেই অভিযুক্ত ও অন্যদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

গোড়ায় নেতাই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত শুভেন মণ্ডলের বাবা মারা যাওয়ায় তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নেতাই গ্রামের ওই বাসিন্দাকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামানোই যায়নি। ক্ষিপ্ত জনতা গাড়ি ঘিরে রাখে। তারপর মেদিনীপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (রিডেজিগনেটেড) শান্তনু মুখোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘বিচারাধীন ওই বন্দিরা বিচার বিভাগীয় হেফাজতে আছেন, তাঁদের ক্ষতি হলে দায় বর্তাবে আদালতের উপরে।’ তারপর থেকে নেতাই গণহত্যা মামলার কোনও অভিযুক্তকে প্যারোলে ছাড়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dalim Pandey Netai CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE