অপেক্ষা: কলকাতা-উত্তরবঙ্গ রুটে বন্ধ বাস চলাচল। ধর্মতলায় আটকে পড়া যাত্রীরা। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
মালদহ থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ট্রেন চালানো এখনও সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু আজ বুধবার, ডালখোলা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় ডালখোলা থেকে যাত্রী নিয়ে স্পেশ্যাল ট্রেনটি ছাড়বে। গুয়াহাটি পৌঁছবে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায়। তবে ডালখোলা থেকে ট্রেন চালানো গেলেও কলকাতা বা দেশের অন্য প্রান্তের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও অসমের ট্রেন যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্নই থেকে গেল। রেল সূত্রের খবর, মালদহ থেকে ডালখোলা পর্যন্ত এখনও ট্রেন লাইনে জল নামেনি।
বন্যা পরিস্থিতিরও তেমন কোনও উন্নতি না হওয়ায় লাইনের অবস্থা ঠিক কেমন হয়ে রয়েছে তা বোঝা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ দিনও কলকাতা এবং দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে অসমের দিকে কোনও ট্রেনই চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবারও বাতিল করা হয়েছে একাধিক মেল এবং এক্সপ্রেস। বিভিন্ন স্টেশনে আটকে রয়েছেন হাজার হাজার যাত্রী।
আরও পড়ুন: প্লাবিত উত্তরে মৃত্যু আরও চার জনের
পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিনও বাতিল হয়েছে দার্জিলিং মেল, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, বালুরঘাট এক্সপ্রেস, তিস্তাতোর্সা, কামরূপ, কাঞ্চনজঙ্ঘা-সহ একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেন। চালানো যাচ্ছে না প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিও। এমনকী মালগাড়িও আটকে থাকায় আটকে গিয়েছে পণ্যসামগ্রী। রেল পথে পাঠানো যাচ্ছে না ত্রাণসামগ্রীও।
মালদহ স্টেশনে কয়েকটি মেল, এক্সপ্রেস এবং লাইন মেরামতির সরঞ্জাম নিয়ে মালগাড়ি লাইন আটকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে ওই স্টেশনে আর ট্রেন ঢোকার মতো পরিস্থিতি নেই। ফলে কোনওমতে শুধু চালানো হচ্ছে গৌড় এক্সপ্রেসকে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, বিহারের অংশে এবং আলিপুরদুয়ারে পরিস্থিতি এখনও খারাপ। সোমবার বিহারের বারসইয়ে তিলতা ও সুধানীতে যে সেতুটি ভেঙে গিয়েছে সেই সেতু মেরামতির কাজ শুরু করেছেন রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা। বুধবার এমনিতেই সকালে ট্রেন চলাচলের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার কথা। সেই মতো পর্যবেক্ষণ শুরুও করেছেন রেল কর্তারা। তবে রেল কর্তাদের অনুমান, বন্যা পরিস্থিতিতে যে ভাবে রেলের ক্ষতি হয়েছে তা মেরামত করে টানা ট্রেন চালাতে এখনও কমপক্ষে তিন-চার দিন প্রয়োজন হবে।
সড়কপথেও কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও কার্যত বন্ধই থেকে গিয়েছে। তবে কলকাতা থেকে এ দিন রায়গঞ্জ পর্যন্ত ২২টি রাষ্ট্রীয় পরিবহণের বাস পাঠানো হয়েছে। শিলিগুড়ি থেকেও এ দিন সকালে রায়গঞ্জ পর্যন্ত পাঁচটি বাস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু দূর এগিয়ে যাত্রী নিয়ে বাসগুলি আবার ফেরত চলে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মালদহ টাউন স্টেশনে গত তিন দিন ধরে আশ্রয় নিয়েছেন পাঁচশোরও বেশি যাত্রী। স্টেশনে মিলছে না পর্যাপ্ত খাবার। এমনকী শৌচকর্ম করতেও গুনতে হচ্ছিল বাড়তি টাকা।
সোমবার স্টেশন সংলগ্ন শৌচাগার থেকে অসমের বাসিন্দা সইফুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিনি ১৫ ঘণ্টা ট্রেনে আটকে ছিলেন। আজও কয়েক জন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীদের একাংশ। স্টেশন ম্যানেজারকে ঘেরাও-ও করেন তাঁরা। পরে রেলপুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যাত্রীদের বিনা খরচে স্টেশনের শৌচাগার ব্যবহারের অনুমতি দেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy