Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Dengue

দেগঙ্গায় মৃত্যু-মিছিল বাড়ছেই

ডেঙ্গি আর অজানা জ্বরের মৃত্যু-মিছিলে এমনই চিত্র দেগঙ্গায়। মঙ্গলবার রাতেও মৃত্যু হয়েছে দু’জনের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share: Save:

ঘরে ঘরে টাঙানো মশারি। ভিতরে শুয়ে-বসে বাচ্চা থেকে বুড়ো। হাড় জিরজিরে রুগ্ণ শরীর। কোটরে ঢুকে যাওয়া চোখে আতঙ্ক। স্কুল নেই, খেলাধুলা নেই। বন্ধ কাজকর্মও।

ডেঙ্গি আর অজানা জ্বরের মৃত্যু-মিছিলে এমনই চিত্র দেগঙ্গায়। মঙ্গলবার রাতেও মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। বুধবারও বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছিল উপচে পড়া ভিড়। স্বাস্থ্য দফতরের শিবিরগুলি দেখভাল করছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষেরা। সেখানেও ভিড় ছিল রোগীদের।

এ দিন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘দেগঙ্গার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে শিবিরগুলিতে কেমন চিকিৎসা চলছে, জনপ্রতিনিধিরা তা খতিয়ে দেখেছেন। যেখানে যা প্রয়োজন, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

তবে সরকারি স্বাস্থ্য শিবির নিয়ে অভিযোগও প্রচুর। বেড়াচাঁপা-২ পঞ্চায়েতের যাদবপুর পূর্বপাড়ার সায়েরা বিবি (৪৫) কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার ডেঙ্গিতে মারা যান। এ দিন সায়েরার ছেলে আব্দুল হাই বলেন, ‘‘গ্রামে এক দিনই স্বাস্থ্য শিবির হয়েছিল। চারটে প্যারাসিটামল আর গ্যাসের বড়ি দেওয়া হয়। এতে কি জ্বর কমে?’’ আব্দুলের আরও অভিযোগ, ‘‘সরকারি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করতে দিলে রিপোর্ট মিলছে দু’-তিন দিন পরে। রিপোর্ট পাওয়ার পরদিনই মা মারা গেলেন। কোনও চিকিৎসা করার সুযোগই পেলাম না।’’

যাদবপুর গ্রামে ঘুরলেই দেখা যাবে, ঘরে ঘরে জ্বর। কেউ বা কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দিশেহারা অবস্থা গ্রামের মানুষজনের। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ আলি বলেন, ‘‘যাঁদের টাকা আছে, তাঁরা বেসরকারি জায়গা থেকে দিনের দিন রক্ত পরীক্ষা বা চিকিৎসা করাচ্ছেন। কিন্তু গরিবেরা হিমসিম খাচ্ছেন।’’ মঙ্গলবার রাতে আর জি করে মারা যান চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাহারপাড়ার বাসিন্দা কল্পনা কাহার (৫৫)। এ দিন শাবানা খাতুন নামে এক বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘এখানে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকতেও ছুটতে হচ্ছে বারাসত কিংবা কলকাতার হাসপাতালে। এখানে নেই ডাক্তার, নেই চিকিৎসা ব্যবস্থা।’’

দেগঙ্গা সংলগ্ন এলাকার ডেঙ্গি আক্রান্তদের ভিড় সামলাতে বুধবার থেকে বারাসত হাসপাতালে ক্যাম্প করেছে বারাসত পুরসভা। চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় জানান, বারাসত শহর ছাড়াও দেগঙ্গা, হাবরার রোগীদের ভিড় আছে। এ দিন ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য দু’টি যন্ত্র বসানো হয় হাবরা হাসপাতাল ও দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্থানীয়দের বক্তব্য, আগে ব্যবস্থা হলে কিছু মৃত্যু এড়ানো যেত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Deganga Dengue দেগঙ্গা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE