এই সেই রিসর্ট।—ফাইল চিত্র।
কয়েকশো একর জমির উপর তৈরি হয়েছিল বিলাসবহুল রিসর্ট। সেখানে কৃষি খামারের পাশাপাশি ছাগল, গরু, মুরগি, শুয়োরের খামারও ছিল। মাছ চাষও হত। জৈব সার ব্যবহার করে হরেক কিসিমের আনাজ ফলানো হত। ছিল ফলের বাগান। ঝাড়গ্রামের উপকণ্ঠে দহিজুড়ির দিঘিশোলে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা এমপিএসের ওই রিসর্ট এবং কৃষি খামার কেন্দ্র অথবা বা রাজ্য সরকারকে অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চে ওই প্রস্তাব দেন ওই অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, অরিন্দম দাস। রিসর্টটি এখন বন্ধ রয়েছে।
বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। কমিটির কাজের তদারকি করছে বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। এমপিএসের আমানতকারীরা টাকা ফেরত না পেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের দায়ের করা মামলার শুনানিতে সম্প্রতি বিকাশবাবুরা প্রস্তাব দেন, রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারকে ঝাড়খণ্ডের ওই রিসর্টটি কিনে নিতে নির্দেশ দিক ডিভিশন বেঞ্চ। যে টাকা মিলবে সেই টাকা আমানতকারীদের বিলি করে দেওয়া যেতে পারে। আইজীবীরা আদালতে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকার ওই রিসর্টের দামের মূল্যায়ন করেছে ৮৮৭ কোটি টাকা। আইনজীবীরা জানান, তালুকদার কমিটির কাছেও আমানতকারীরা এমন প্রস্তাব দিয়েছেন।
আইনজীবীরা জানান, দিঘিশোল মৌজায় প্রায় ছ’শো একর জায়গা জুড়ে রয়েছে ওই রিসর্ট। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগ ও মিনারেল ওয়াটার তৈরিরও প্ল্যান্ট ছিল সেখানে। বন্ধ হওয়ার সময় স্থানীয় নয় হাজার বাসিন্দা এমপিএসের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতেন। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার রিসর্টটি অধিগ্রহণ করে পুনরায় চালু করলে ওই এলাকায় বেকারত্ব কমবে। স্থানীয় বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।
২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ‘এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপার্স লিমিটেড’ সংস্থার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির দখল নেওয়ার জন্য রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেই জেলা প্রশাসন রিসর্টটি বন্ধ করে দেয়। আইনজীবী অরিন্দম জানান, এমপিএসের ওই রিসর্ট নিলামের জন্য তিন বার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। কেউ কিনতে আগ্রহ দেখাননি। চতুর্থবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবারেও কেউ আগ্রহ না দেখালে ফের আদালতে আবেদন জানানো হবে, রাজ্য বা কেন্দ্রকে ওই রিসর্টটি কিনে নিতে নির্দেশ দেওয়া হোক।
আইনজীবীরা জানান, সারদা, রোজভ্যালির মতো অর্থ লগ্নি সংস্থার হোটেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আদালতের নির্দেশ। কিছু ক্ষেত্রে আবার কোর্টেরই নির্দেশে সমবায় তৈরি করে কর্মীরা সংস্থা চালাচ্ছেন। ঝাড়গ্রামের রিসর্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক দিকে ন’হাজার লোক কর্মহীন হয়েছেন। তেমনই কেউ কিনতে না চাওয়ায় আমানতকারীদের টাকা ফেরতের বিষয়টিরও সমাধান হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy