Advertisement
E-Paper

দু’দিনেও শক, অবাক করছে অবাধ্য ডেঙ্গি

জ্বর শুরু হয়েছিল শনিবার। খিঁচুনি আর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সোমবার মৃত্যু হয়েছিল ২৪ বছরের সৃজা ঘোষের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩১

জ্বর শুরু হয়েছিল শনিবার। খিঁচুনি আর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সোমবার মৃত্যু হয়েছিল ২৪ বছরের সৃজা ঘোষের।

বাগুইআটির ২৪ বছরের রুমন ঘোষ জ্বর নিয়ে শনিবার ভর্তি হয়েছিলেন উত্তর শহরতলির একটি নার্সিং হোমে। বুধবার হঠাৎ করেই তাঁর রক্তচাপ কমে যায়। কমে যায় দেহের তাপমাত্রাও। অন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বেশি ক্ষণ বাঁচানো যায়নি
ওই যুবককে।

বালিগঞ্জের সাত বছরের রাই সাহার জ্বর কমে গিয়েছিল। তার পরে হঠাৎ করেই চার দিনের মাথায় শরীর খুব খারাপ হয়ে যায়। কাহিল হয়ে পড়ে সে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরে মৃত্যু হয়।

সৃজা, রুমন, রাই তিন জনেই ডেঙ্গি রোগী। আর তিন জনেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তিন জনেরই মৃত্যুর আগে শরীর ছেড়ে দিয়েছিল। পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ওই তিন জনই ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমের শিকার।

এক পরজীবী বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, সংক্রমণ শুরুর পরে ডেঙ্গি শক অবস্থায় পৌঁছতে অন্তত পাঁচ-ছ’দিন সময় লাগার কথা। আর ডেঙ্গি শক সিনড্র্রোম সাধারণত ১০ বছরের কম বয়সিদেরই হয়। তাই এতে শিশুদেরই বেশি মৃত্যু হয় বলে ডেঙ্গি সংক্রান্ত বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক নিবন্ধে উল্লেখ আছে। কিন্তু সৃজা এবং রুমনের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম অনেকটাই মানেনি ডেঙ্গি। সৃজা তো অসুস্থ হওয়ার দু’দিনের মধ্যে শক সিন্ড্রোমে পৌঁছে গিয়েছিলেন।

সল্টলেকের যে বেসরকারি হাসপাতালে রুমনের মৃত্যু হয়, সেখানকার ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সুশ্রুত বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘রোগীর ডেঙ্গি হয়েছিল। যখন তাঁকে আনা হয় তখনই তিনি হেমারেজিক শক-এ চলে গিয়েছিলেন। পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। এর পর খুব জোর কয়েক ঘণ্টা বেঁচেছিলেন।’’ বাগুইআটির এক নার্সিংহোম থেকে রুমনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সল্টলেকের নার্সিংহোমটিতে।

কেন রুমনের শক সিনড্রোম হয়েছিল তার ব্যাখ্যা নেই বাগুইআটির ওই নার্সিংহোমের কাছেও। সেখানে রুমনের চিকিৎসা করছিলেন সুকান্তরঞ্জন সরকার। ওই যুবকের শক সিনড্রোমের কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছেন সুকান্তবাবুও। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘ছেলেটি ভালই ছিল। বুধবার রাতে হঠাৎ করে অবনতি হয়। আরও ভাল চিকিৎসার জন্য ওকে সল্টলেকের ওই হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি।’’

তাঁর ব্যাখ্যা, হঠাৎ করেই ওই যুবকের পেটে যন্ত্রণা আর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অক্সিজেনের স্যাচুরেশন লেভেল ৯৭-এ নেমে গিয়েছিল। রুমনের বাবা রঞ্জিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘বুধবার রাতে ছেলে জানায় ওর পেট ফুলে গিয়েছে। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। তার পরে ওকে সল্টলেকের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’ সেখানে রুমনকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তাঁর শরীরের কোনও অঙ্গ কাজ করছে না। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। যে ভাবে রোগী কিছুটা ভাল হয়ে যাওয়ার পরে তাঁরা শক সিনড্রোমে চলে যাচ্ছেন, তাতে পরজীবী বিশেষজ্ঞরা কিছুটা অবাক। রাই এবং রুমনের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। পরজীবী বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী বলেন, ‘‘এমন সব ঘটনা ঘটছে যার তল খুঁজে পাচ্ছি না অনেক সময়। রোজই জটিল থেকে জটিলতর রোগী আসছেন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার রোগী শকে চলে যাওয়ার পরেও জীবাণু ধরা পড়ছে না।’’

ওই পরজীবী বিশেষজ্ঞের মন্তব্য, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে জীবাণু ধরা পড়ছে একেবারে শেষ মুহূর্তে। তাই রোগীদের ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হচ্ছে।’’

Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy