E-Paper

ভোটের আগে নিয়োগের খতিয়ান প্রকাশ করতে চায় রাজ্য

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছেন, প্রতিটি দফতরকে বলা হয়েছে, স্থায়ী এবং অস্থায়ী ভাবে যত নিয়োগ হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা করতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট নিয়োগের সাপেক্ষে যথাযথ নথিও।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:৫১
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত হওয়া যাবতীয় সরকারি নিয়োগের সবিস্তার তথ্য সরকারের কাছে জমা দিতে হবে। নবান্নের শীর্ষমহলের তরফে সব দফতরকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। আগামী বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখেই নবান্নের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত, যখন নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একের পর এক বিতর্কে শান দিয়ে চলেছে বিরোধীরা, তখন এই তালিকা প্রকাশের উদ্যোগের পিছনে বিরোধীদের উত্তর দেওয়াটাই মূল লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে। আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, যদি নিয়োগ-তথ্য শেষ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়, তবে এই পরিকল্পনার নেপথ্যে বেসরকারি কোনও ভোট-কুশলী সংস্থার মাথাও কাজ করে থাকতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছেন, প্রতিটি দফতরকে বলা হয়েছে, স্থায়ী এবং অস্থায়ী ভাবে যত নিয়োগ হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা করতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট নিয়োগের সাপেক্ষে যথাযথ নথিও। অতীতেও একবার এমন পদক্ষেপ করা হয়েছিল। তার পর সেই তথ্য আর আলোর মুখ দেখেনি। এখন তা প্রকাশ করার একটা ভাবনাচিন্তা কাজ করছে সরকারের শীর্ষ মহলে। ইতিমধ্যে দফতরগুলি নির্দিষ্ট বয়ানে সেই তথ্য নবান্নে পাঠাতেও শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, বিরোধীদের নিয়োগ-অভিযোগ উড়িয়ে নবান্ন বরাবর দাবি করে আসছে, নিয়োগ হচ্ছে বিপুল সংখ্যায়। বরং জাতীয় স্তরে এই ক্ষেত্রে এ রাজ্যের অগ্রগতি অনেকটাই এগিয়ে। শুধু সরকারিই নয়, বরং বেসরকারি ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে ক্রমশ। এই দিক থেকে কেন্দ্রে মোদী সরকারের নিয়োগ-অগ্রগতি নিয়েও পাল্টা প্রশ্ন তুলে থাকেন শাসক দলের নেতারা। গত বাজেটেই রাজ্য সরকার দাবি করেছিল, গত বছর (২০২৪-২৫) দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৯৩%। সে জায়গায় পশ্চিমবঙ্গে সেই হার ছিল ৪.১৪%। অন্য কিছু রাজ্যের উদাহরণ টেনে সরকার জানিয়েছিল, ছত্তীসগঢ়ে ৮.৬%, হিমাচলপ্রদেশে ১০.৪%, ওড়িশায় ৮.৭%, রাজস্থানে ৯.৭%, উত্তরপ্রদেশে ৭.২% বেকারত্ব ছিল সে বছরের শেষ তিন মাসে। ওই সময়ে রাজ্যের সেই অবস্থান ছিল ৫.৭%। তা ছাড়া ৯৪টি সামাজিক প্রকল্পের কারণে সার্বিক ভাবে উপকৃত হচ্ছেন এ রাজ্যের মানুষ।

শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ-দুর্নীতি মাথাচাড়া দেওয়ার পরে বিরোধীরা নিয়মিত ভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ শানাচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম—খেলা, মেলা, উৎসব, অনুদানে লাগামছাড়া খরচ করায় নবান্ন নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রটিকে অবহেলা করছে। ফলে স্থায়ী পদে চাকরি হচ্ছে না। বরং তুলনায় কম বেতনে চুক্তিভিত্তিক বা আংশিক সময়ের কর্মীদের দিয়েই কাজ সামলানো চলছে। আগামী বিধানসভা ভোটের আগে এটা শাসক দলকে বিদ্ধ করার একটা অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের অন্দরের দাবি, প্রায় প্রতিটি মন্ত্রিসভার বৈঠকেই শূন্য পদ পূর্ণ এবং নতুন পদ সৃষ্টি নিয়ে প্রচুর প্রস্তাবে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপ সরকারি চাকরি ঠেকিয়ে রাখার অভিযোগ খণ্ডন করে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nabanna West Bengal Assembly Election 2026 West Bengal Recruitment

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy