আট মাসে ১ কোটির রেকর্ড ছুঁতে চলেছে দিঘার জগন্নাথধাম। ২০২৫ সাল শেষ হওয়ার আগেই দর্শনার্থীর সংখ্যা ১ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করবে। তার মধ্যেই পুরীর আদলে ভক্তদের জন্য ‘ধ্বজাসেবা’ শুরু করলেন দিঘার জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ।
পুরীর মন্দিরের মাথায় ধ্বজা দান করেন ভক্তেরা। বিশেষ বিশেষ দিনে কোন ভক্তের দেওয়া ধ্বজা মন্দিরের চূড়ায় উড়বে, তার নিলামও হয়। দিঘায় এখনই সেই নিলাম শুরু না-হলেও ধ্বজা সেবার বন্দোবস্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ। বিশেষ একটি নম্বরে ফোন করে ধ্বজা ওড়ানোর দিন অগ্রিম ‘বুক’ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট নম্বরে ফোন করেই দিনমাহাত্ম্যে ধ্বজার মূল্যের বিষয়ে বিশদে জানা যাবে। দিঘা জগন্নাথধাম ট্রাস্টের অন্যতম পুরোধা তথা ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণ দাসের কথায়, ‘‘পুরীর মতোই এ বার দিঘার মন্দিরেও ধ্বজা দান করতে পারবেন ভক্তেরা।’’
প্রত্যহ বিকাল ৪টে নাগাদ মন্দিরের সেবায়েতরা ধ্বজা বাঁধেন মন্দিরের চূড়ায়। পুরীর মন্দিরেও রোজ একই সময়ে ধ্বজা উত্তোলন হয়। রাধারমণ জানিয়েছেন, পুরীর মতোই দিঘার মন্দিরের চূড়াতেও ধ্বজা ওড়ানো দেখতে ক্রমশ ভিড় বাড়ছে। উল্লেখ্য, পুরীর মন্দিরে ধ্বজা ওড়ানো একটি দ্রষ্টব্য বিষয়। পালা করে সেবায়েতরা সামনের দিকে মুখ করে মন্দিরের কাঠামোয় পিছন দিয়ে হাতের উপর ভর দিয়ে মন্দিরের চূড়ায় ওঠেন। তার পরে ধ্বজা বাঁধা হয় মন্দিরের চূড়ায়।
আরও পড়ুন:
-
বর্ষবরণের আগেই পর্যটক-জোয়ার দিঘায়, হোটেলে হোটেলে ভিড়, ৩১ ডিসেম্বর সমুদ্রসৈকতে থাকছে ‘চমক’
-
ডিসেম্বরে ১ কোটি ছুঁয়ে ফেলবে জগন্নাথ ধামের দর্শানার্থীসংখ্যা! পর্যটনস্থল দিঘা ৮ মাসের মধ্যে এখন সফল তীর্থস্থানও
-
ছ’মাসে এসেছেন ৯০ লক্ষ ভক্ত! প্রণামী থেকে দৈনিক আয় বিপুল, দিঘার জগন্নাথ ধাম পর্যটনকেন্দ্র থেকে এখন ‘আত্মনির্ভর’ তীর্থস্থান
দিঘার জগন্নাথধামে ইতিমধ্যেই সকাল, মধ্যাহ্ন ও সন্ধ্যায় ভক্তদের জন্য আট রকম মহাপ্রসাদ বিতরণ করছেন কর্তৃপক্ষ। তালিকায় রয়েছে খিচুড়ি ভোগ, মিষ্টি মহাপ্রসাদ, প্যাঁড়া মহাপ্রসাদ, লুচি-সব্জি মহাপ্রসাদ (প্রাতরাশ), মহাপ্রসাদ (মধ্যাহ্নভোজ), বিশেষ মহাপ্রসাদ (মধ্যাহ্নভোজ), সন্ধ্যার মহাপ্রসাদ, সন্ধ্যার বিশেষ মহাপ্রসাদ। সেই মহাপ্রসাদ পাওয়ার জন্যও একটি নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে ফোন করে ‘বুক’ করতে হবে। প্রাতরাশের ‘বুকিং’ করতে হবে তার আগের দিন। মধ্যাহ্নভোজের জন্য ‘বুকিং’-এর সময় আগের দিন থেকে সংশ্লিষ্ট দিনে সকাল ১০টা পর্যন্ত এবং সন্ধ্যার মহাপ্রসাদের ‘বুকিং’ করতে হবে সংশ্লিষ্ট দিন সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে। এক একটি প্রসাদের মূল্য এক এক রকম। রাধারমণ জানাচ্ছেন, ভক্তেরা যাতে সামর্থ্যের মধ্যে প্রসাদ গ্রহণ করতে পারেন, সেইদিনে লক্ষ্য রেখেই প্রসাদের মূল্য ধার্য করা হয়েছে। ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে মিলবে মহাপ্রসাদের ডালি।
দিঘার জগন্নাথধামের প্রসাদ রাজ্যের সমস্ত বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত মে মাসে রেশন দোকানের মাধ্যমে শুকনো প্যাঁড়া পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। এ বার মন্দিরেও ভোগের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আট রকম বন্দোবস্ত করা হল। সৈকতশহরের জগন্নাথধামের পোশাকি নাম ‘জগন্নাথ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’। বর্ষশেষে সেখানে শুরু হয়েছে ওড়িয়া নৃত্যের অনুষ্ঠান। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ওই অনুষ্ঠান চলবে সোমবার পর্যন্ত। বছরের শুরুতেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে মন্দিরপ্রাঙ্গণে।