Advertisement
E-Paper

আইনি জটে থমকে ভবন নির্মাণ, সমস্যায় পড়ুয়ারা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল। যে কোনও মুহূর্তে টালির চালের ইটের দেওয়াল চাপা পড়ে বড় রকম দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। তাই স্কুলের পিছনে প্রায় দু’কাঠা জমির উপরে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় দোতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০২:০৩
স্কুলের পুরনো ভবন। ছবি: দিলীপ নস্কর।

স্কুলের পুরনো ভবন। ছবি: দিলীপ নস্কর।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল। যে কোনও মুহূর্তে টালির চালের ইটের দেওয়াল চাপা পড়ে বড় রকম দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। তাই স্কুলের পিছনে প্রায় দু’কাঠা জমির উপরে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় দোতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ওই জমির মালিকানা নিয়ে আইনি জটে মাঝপথে দাঁড়িয়ে নির্মাণ কাজ। বাধ্য হয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে কাদিপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চলছে গ্রামেরই হাইস্কুলে। সেখানেও নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মন্দিরবাজারে চাঁদপুর চৈতন্যপুর পঞ্চায়েতে কাদিপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারি অনুমোদন পায় ১৯৪০ সালে। প্রথম থেকেই ইটের দেওয়াল, টালির চালের ঘরে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরু হয়। তার পর থেকে বিদ্যালয়ের ভবনটি সে ভাবে পাকাপাকি ভাবে সংস্কার হয়নি। ফলে গত বছর আটেক থেকে বিদ্যালয় ভবনের দেওয়ালে ফাটল দেখা দেয়। টালির চাল কোথাও কোথাও ঝুলে বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়ায়। বর্ষায় বৃষ্টির জল পড়ত ভিতরে। তা সত্ত্বেও ওই ভবনেই পঠনপাঠনের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের পিছনে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় নতুন দোতলা ভবনের কাজ শুরু হলেও জমির মালিকানা নিয়ে আইনি জটিলতায় ভবন নির্মাণের কাজ মাঝপথে বন্ধ রয়েছে। আর বর্তমান স্কুলভবনে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ওই গ্রামের হাইস্কুলে সকালে প্রাথমিক বিভাগের পঠনপাঠন চালাতে হচ্ছে।

থমকে নির্মাণ।

কিন্তু হাইস্কুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজকর্ম চালাতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আলমারি রাখার কোনও জায়গা নেই বলে বিদ্যালয়ের দরকারি কাগজপত্র রাখা যাচ্ছে না। আলাদা মিড ডে মিলের রান্নাঘর নেই। ফলে পুরনো স্কুলভবনের বারান্দায় আগের মতোই রান্নার কাজ চলছে। সেখানে খাবার আনতে গিয়ে টালি চাপা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ছাড়াও, পরিত্যক্ত ওই স্কুলভবনের মধ্যে গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চারা খেলা করছে। সে ক্ষেত্রেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। অবিলম্বে ওই ভবনটি ভেঙে ফেলা দরকার। তা ছাড়া, বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ভবন না থাকায় দিনে দিনে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তলানিতে ঠেকছে। বর্তমানে মোট ৭৭ জন ছাত্রছাত্রী। শিক্ষক মাত্র দু’জন। তাই অত ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। নিজস্ব স্কুলভবন ও প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত। তাঁদের অভিযোগ, এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের একটু শিক্ষার আলো দেখাতে চায়। কিন্তু এই বেহাল পরিবেশে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতেই চায় না। তা ছাড়া, চাষবাসের সময়ে সকালে স্কুলে পাঠানোতেও সমস্যা হয়।

স্কুল সূত্রের খবর, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ২০০৬-০৭ সালে সর্বশিক্ষা মিশন থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছিল। তার কিছু দিনের মধ্যেই নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মাস কয়েক কাজ চলার পরে ছাদ দেওয়ার আগের মুহূর্তে জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্কের জের আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্গাপদ ঘোষ বলেন, “বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন না থাকায় সকাল ৭টার মধ্যে আমাদের ও ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসাটা ভীষণ সমস্যা। ছাত্রছাত্রীদের বলে দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১০টায় স্কুল ছুটির পর প্রায় মিনিট পাঁচেক হেঁটে পুরনো বিদ্যালয়ে গিয়ে মিড ডে মিলের খাবার বাড়ি নিয়ে যেতে। নতুন ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে আইনি জটিলতায় পড়ে ইট, বালি, স্টোনচিপস প্রায় সব চুরি হয়ে গিয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য এখনও প্রায় ১ লক্ষ টাকা স্কুল তহবিলে রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ-সহ সমস্ত সমস্যার বিষয় সংশ্লিষ্ট দফতরকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।”

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আইনি সমস্যা মিটলে স্কুলের উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।

mandir bajar legal problem stoppage school building construction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy