Advertisement
E-Paper

আতঙ্ক কাটেনি হাড়োয়ায়, এ বার আক্রান্ত শাসক দল

তৃণমূলের এক মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধর করে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল হাড়োয়ার নারায়ণপুর গ্রামে। সোমবার, রাজ্যে পঞ্চম তথা শেষ দফা ভোটের রাতে এই ঘটনায় অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। ওই দিনই সকালে পাশের গ্রাম ব্রাহ্মণচকে ভোট দিতে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন সিপিএমের বেশ কয়েক জন। সন্ত্রাস ও পাল্টা সন্ত্রাসের আবহে ক্রমেই তেতে উঠছে এলাকা। হাড়োয়ারই অন্য একটি গ্রামে এ দিন দুপুরে বোমা-গুলি নিয়ে আক্রমণ চলে। জখম হন তৃণমূলের ৫ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০৩:১০
বারাসত জেলা হাসপাতালে জখম তৃণমূল কর্মীরা। ছবি: সুদীপ ঘোষ

বারাসত জেলা হাসপাতালে জখম তৃণমূল কর্মীরা। ছবি: সুদীপ ঘোষ

তৃণমূলের এক মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধর করে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল হাড়োয়ার নারায়ণপুর গ্রামে। সোমবার, রাজ্যে পঞ্চম তথা শেষ দফা ভোটের রাতে এই ঘটনায় অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। ওই দিনই সকালে পাশের গ্রাম ব্রাহ্মণচকে ভোট দিতে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন সিপিএমের বেশ কয়েক জন। সন্ত্রাস ও পাল্টা সন্ত্রাসের আবহে ক্রমেই তেতে উঠছে এলাকা। হাড়োয়ারই অন্য একটি গ্রামে এ দিন দুপুরে বোমা-গুলি নিয়ে আক্রমণ চলে। জখম হন তৃণমূলের ৫ জন।

সোমবার ব্রাহ্মণচক গ্রামের ঘটনার পরে আর বুথমুখো হননি এলাকার বেশ কিছু সিপিএম কর্মী-সমর্থক। বিশেষ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ নিজে আসেন এলকায়। কিন্তু তিনি দাঁড়িয়ে থেকেও ভরসা জোগাতে ব্যর্থ হন। সুধীরকুমারকে ওই সব ভোটার জানিয়ে দেন, ভোট দেবেন না। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সকালে এক দফা আক্রমণ করেছে শাসক দল। ভোট দিলে পরিস্থিতি রাতের দিকে আরও উত্তপ্ত হতে পারে। তখন তাঁদের নিরাপত্তা দেবে কে?

গ্রামবাসীদের সেই আশঙ্কা খুব ভুলও ছিল না। ওই রাতেই বোমাবাজি হয়েছে ব্রাহ্মণচক গ্রামে। গুলিও চলে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। গ্রামে শাসক দলের মোটর বাইক বাহিনীর টহল চলছে বলেও জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবার সকালে জনা কয়েক পুলিশ কর্মী টহল দিলেও বেলা বাড়লে তাঁদের দেখা মেলেনি বলে গ্রামবাসীদের দাবি।

ব্রাহ্মণচকের পাল্টা হিসাবে সোমবার রাতেই আক্রান্ত হন পাশের গ্রাম নারায়ণপুরের তৃণমূলের এক মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁকে মারধর করে ধর্ষণের চেষ্টা হয় বলে দাবি তৃণমূলের। শাসক দলের দাবি, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ ওই মহিলার বাড়িতে চড়াও হয় সিপিএমের সশস্ত্র লোকজন। কেন তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন তিনি, সেই প্রশ্ন তুলে মারধর করা হয় ওই মহিলাকে। তাঁর চুলের মুঠি ধরে টেনে বাড়ির পাশে অন্ধকার জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। মহিলার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে গেলে দুষ্কৃতীরা বোমা-গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালায়। রাতেই হাড়োয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় মহিলার। স্থানীয় দুই সিপিএম নেতা গৌর ঘোষাল ও প্রদীপ মণ্ডল-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি।

হাড়োয়ারই অন্য এক প্রান্ত গোপালপুর ১ পঞ্চায়েতেও মঙ্গলবার দুপুরে আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। গুলি বোমার আঘাতে জখম হয়েছেন ৫ জন। দু’জনকে রাতে আনা হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। ঘটনার সূত্রপাত এ দিন বেলা ২টো নাগাদ। তৃণমূলের আখের আলি মণ্ডল কেন শাসক দলের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন এই প্রশ্ন তুলে সিপিএমের মন্টু কাহার তাঁর উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তখনকার মতো রণে ভঙ্গ দিলেও মন্টু পরে দলবল নিয়ে এসে চড়াও হয় আখেরের বাড়িতে। বোমা-গুলি ছুড়তে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। লুঠপাটও চালায়। আখের ছাড়াও জখম হন হাফিজুল শেখ, রেহেনা বিবি, রসুল আলি মণ্ডল ও ইমান আলি মণ্ডল।

গ্রামের লোকজন রাজু পাড়ুই নামে হামলাকারীদের এক জনকে ধরে ফেলে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিপিএম সমর্থক মন্টু-সহ কয়েক জনের নামে থানায় অভিযোগ করেছে তৃণমূল। সব ক’টি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক কর্তা।

এ ব্যাপারে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “সন্ত্রাসের রাজনীতি করছে সিপিএম। এলাকা উত্তপ্ত করতে চাইছে ওরা।” অন্য দিকে, মহিলা পঞ্চায়েত সদস্যের উপরে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের হাড়োয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক ভুবন মণ্ডল বলেন, “এ সব তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।”

haroa tmc cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy