Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

গ্রেফতার ‘কার্গিল বাহিনী’র সদস্য

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে অশোকনগর থানার পুলিশ গুমা শ্মশান এলাকা থেকে গ্রেফতার করল এক দুষ্কৃতীকে। বাসু হাওলাদার ওরফে নাটা বাসু নামে ওই দুষ্কৃতী ‘কার্গিল বাহিনীর’ সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার বাড়ি হাবরার বাণীপুর এলাকায়। গাঁজা পাচারের সময়ে ধরা হয় তাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০১:২২
Share: Save:

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে অশোকনগর থানার পুলিশ গুমা শ্মশান এলাকা থেকে গ্রেফতার করল এক দুষ্কৃতীকে। বাসু হাওলাদার ওরফে নাটা বাসু নামে ওই দুষ্কৃতী ‘কার্গিল বাহিনীর’ সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার বাড়ি হাবরার বাণীপুর এলাকায়। গাঁজা পাচারের সময়ে ধরা হয় তাকে। ধৃতের কাছ থেকে ছ’কেজি গাঁজা আটক করেছে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাসুর বিরুদ্ধে খুন, মারপিট, মাদক পাচার-সহ নানা অভিযোগ আছে। পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে তাকে খুঁজছিল।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্গিল যুদ্ধের পরে হাবরা-অশোকনগরের দুষ্কৃতীরা ‘কার্গিল বাহিনী’ তৈরি করে এলাকায় ‘অপারেশন’ চালাত। মূলত বাণীপুর, ইতনা কলোনি, আস্রাফাবাদ এলাকার যুবকেরাই ছিল ওই দলে। জমির দখল নেওয়া, প্রমোটারি, সীমান্ত ও পারে মাল পাচার, তোলাবাজি ও চোরাই গাড়ির ব্যবসায় রাশ ধরে রাখতেই একজোট হয়েছিল তারা। দলের ছিল ২০-২৫ জন। মধ্যমগ্রাম, নিউ ব্যারাকপুর, অশোকনগর, গুমা, হাবরা, মছলন্দপুরে দাপিয়ে বেড়াত এই দুষ্কৃতীরা। প্রায় ২০টি খুনের ঘটনায় জড়িত ছিল তারা।

কার্গিল বাহিনীর হাতে প্রথম খুন হয়েছিলেন অশোনগরের এক সিপিএম নেতা। তাঁকে চলন্ত ট্রেনের কামরায় গুমা-অশোকনগর স্টেশনের মধ্যে খুন করা হয়। এরপরে বাহিনীর দৌরাত্ম্য আরও বাড়ে। মানুষ প্রতিবাদেরও সাহস পেতেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খুন করে দেহ রেল লাইনের উপরে ফেলে রেখে দিত কার্গিল বাহিনী। ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বলে চালাতে চাইত ঘটনাকে। পুলিশও প্রথম দিকে ধন্দে পড়েছিল। লোকাল থানার থেকে জিআরপির কাছে কেসডায়েরি গেলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কমে। সেটাও ছিল এর একটা কারণ।

২০০৬-২০১০ সাল পর্যন্ত অশোকনগর থানার ওসি ছিলেন শঙ্কর রায়চৌধুরী। সে সময়ে দলের বেশির ভাগ দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। অনেকে পড়ে জেলে মারাও যায়। ২০০৮ সালের পরে বাহিনী কার্যত ভেঙে যায়। পরে আর তারা মাথাচাড়া দিতে পারেনি। অতীতে নাটা বাসু এক বার ধরা পড়েছিল। কিন্তু জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। তারপরেও সে অপরাধ জগত থেকে বেরিয়ে আসেনি। নিজস্ব দল গড়ে ডাকাতি শুরু করে বাসু। কার্গিল বাহিনীর শেষ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় স্বস্তিতে পুলিশ। সাধারণ মানুষের মুখেও ঘুরে ফিরে আসছে অতীতের ঘটনা। তাঁরা বলছেন, “সেই সব দিন যেন আর ফিরে না আসে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrested member of kargil bahini ashoknagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE