তীব্র জল সঙ্কট মোচনে শ্যামপুরের রাধাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় এক বছর আগে শুরু হয়েছে একটি জলপ্রকল্পের কাজ। ২০১৫ সালের মধ্যে সেটি শেষ করার কথা থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র এর চতুর্থাংশেরও কম। এক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে অতি ধীর গতিতে কাজ চলেছে এভাবে কাজ চলতে থাকলে আরও কয়েকবছর লেগে যাবে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে। এলাকাবাসীদের দাবি এই জল প্রকল্প যথাসম্ভব দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগি হোক প্রশাসন। এই জলপ্রকল্পটি তৈরি হলে এলাকার ৩০-৩৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি তারা দ্রুত এই কাজ শেষ করাতে তৎপর।
দীর্ঘদিন ধরেই শ্যামপুরের দুটি ব্লকেই পানীয় জলের বেহাল অবস্থা। এই দুটি ব্লকের ১৮ টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র আটটি পঞ্চায়েতের কিছু কিছু এলাকার বাসিন্দারা পরিশ্রুত জল পান। রাধাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের এলাকার অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে নেই কোনও নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। ফলে এলাকার প্রায় ৩০-৩৫ হাজার বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হয় নলকূপের উপরে। এখন এই এলাকায় একশোটির মতো নলকূপ থাকলেও দশটির বেশি খারাপ হয়ে পড়ে আছে। বিশেষ করে গরমের সময় জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় অধিকাংশ নলকূপ থেকে ঠিকমতো জল পান না বাসিন্দারা। এই সমস্যা দূর করতে গত বছরের মাঝামাঝি রাধাপুর ও কমলাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ৭ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে জলপ্রকল্প তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। ‘ন্যাশন্যাল রুরাল ড্রিঙ্কিং ওয়াটার’ প্রোজেক্টের এই প্রকল্পে রাধাপুর ও কমলপুর, কুড়ুল পাড়া, জাল্লাবাদ, কালিদহ ও দক্ষিণ দুর্গাপুর মৌজায় পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই জলপ্রকল্পের শিলান্যাস করেন। কাজও দ্রুত শুরু হয়। সিদ্ধান্ত হয় ৪৭ কিলোমিটারের একটি পাইপও বসানো হবে। এই কাজের উত্তোলনের জন্যে চারটি গভীর নলকূপ খনন করা হবে এবং এর সঙ্গেই তৈরি হবে চারটি পাম্প হাউস।
জেলা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে একবছর কেটে গেলেও কাজ হয়েছে সামান্য। পাইপ পোঁতার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে কিন্তু গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে মাত্র একটি। পাম্প হাউসও হয়েছে মাত্র একটি। অথচ ওভার হেড রিজার্ভারের টেন্ডারই হয়নি। পাম্প হাউসে ও রিজার্ভার তৈরি ফলে বসানো হবে সংযোগকারি পাইপলাইন। তাই দফতরের কথায় কাজ বাকি অনেকটাই। তবে দ্রুত ওই জল প্রকল্পের কাজ শেষ করতে উদ্যোগী বলে জানান বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়াররা। জেলা এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা বিশেষ ভাবে চেষ্টা করছি দ্রুত প্রকল্পটি চালু করার। আশা করছি ২০১৫ মধ্যে প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ শুরু করতে পারব। রাধাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান নীলিমা দলুই ও ওই জল প্রকল্প দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এখানে জল সমস্যা রয়েছে। তাই প্রকল্পটি দ্রুত রূপায়ণ হওয়া দরকার। ৩০-৩৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। জল প্রকল্পের দিকে চাতকের মতো তাকিয়ে আছেন সব বাসিন্দারাই। পুকুরে স্নান করছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁকে জল সমস্যার কথা বললে তিনি বললেন, জলসমস্যা মিটে যাবে ওই যে জলপ্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু রাধাপুর পঞ্চায়েতের মাঠে পোঁতা রয়েছে জলপ্রকল্পের একটি পাইপ। সেটিকে দেখিয়ে ব্যঙ্গাকারে বললেন কিন্তু এই প্রকল্প কবে শেষ হবে জানি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy