দাবি ছিল অনেকদিনের। শেষ পর্যন্ত হাওড়া জেলায় পাঁচটি পুরসভা গঠনের সিদ্ধান্তে খুশি বিভিন্ন মহল। বুধবার বিধানসভায় রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেছেন, বাগনান, আমতা, আন্দুল, ডোমজুড় এবং বালি (পশ্চিম), এই পাঁচটি পুরসভা গঠন করা হবে।
দ্রুত নগরায়নের জন্য একসময় কৃষি ও শিল্পের সহাবস্থান এই জেলায় থাকলেও শিল্প আনুপাতিক হারে হটিয়ে দিচ্ছে কৃষিকে। উন্নত হয়েছে জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝাঁ চকচকে মুম্বই রোড চার লেন থেকে ছয় লেনে পরিণত হওয়ার পথে। রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার রেলপথ। গড়ে উঠেছে উলুবেড়িয়া, বাগনান প্রভৃতি স্টেশন থেকে শ্যামপুর, আমতা, উদয়নারায়ণপুরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের রাস্তা। যোগাযোগের এই সুবিধা এবং শিল্পের বিকাশ এই দুই কারণে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে জেলায়। বাগনান, আমতা, ডোমজুড়, আন্দুল প্রভৃতি এলাকায় মাথা তুলছে বহুতল।
কিন্তু নগরায়নের এই প্রক্রিয়া ধাক্কা খাছে এই সব এলাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকায়। নগরায়নের প্রধান তিনটি শর্ত রাস্তা, নিকাশি ও জল। নগরায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই তিনটি বিষয়ের উন্নতি করা পঞ্চায়েতের পক্ষে সম্ভব নয় বলে স্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারাই। তাঁদের বক্তব্য, এ জন্য যে টাকা লাগবে তা পঞ্চায়েতের বরাদ্দে কুলোবে না। অথচ রাস্তা, নিকাশি ও জল সরবরাহের উন্নতি না-হলে নগরায়ন ব্যহত হয়। একমাত্র পুরসভায় পরিণত হলেই উন্নয়ন খাতে অনেক বেশি টাকা পাওয়া যায়। পাঁচটি পুরসভা তৈরি হলে ওইসব এলাকার উন্নয়ন ত্বরাম্বিত হবে বলে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তাদের দাবি।
বাগনান থানা নাগরিক সমিতির পক্ষে প্রসেনজিত রায় বলেন, “আমরা অনেক আগে বাগনানকে পুরসভার মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। ২০১০ সালেই শুনেছিলাম বাগনান পুরসভায় পরিণত হচ্ছে। যাই হোক, জল নিকাশি, রাস্তা, পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে পুরসভা গঠন করা অত্যন্ত জরুরি।”
‘আমতা সিটিজেন ফোরাম’-এর পক্ষে ফটিক চক্রবর্তী বলেন, “আমতা পুরসভা করার দাবি বেশ পুরনো। এ জন্য আমরা বিভিন্ন মহলে বহুবার আবেদন জানিয়েছি।”
হাওড়া জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য আন্দুলের বাসিন্দা। আন্দুলকে পুরসভা করার সিদ্ধান্ত সমর্থন করে তিনি বলেন, “এ সব এলাকা বহুদিন ধরেই নগরায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। শহরে পরিণত হওয়ায় ১০০ দিনের প্রকল্পের মতো বহু প্রকল্প এইসব জায়গায় রূপায়ণ করা যায় না। পুরসভা হলে এলাকায় আরও উন্নয়ন করা যাবে।” ডোমজুড় পুরসভা গঠনের সিদ্ধান্তে খুশি স্কুলশিক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, গৃহবধূ জয়শ্রী কোনার। দু’জনেই জানালেন, পুরসভা হলে উন্নয়নমূলক কাজে অনেক বেশি টাকা বরাদ্দ হয়। তাতে বাসিন্দাদেরই লাভ। এটা আরও আগে করা দরকার ছিল।” তবে একইসঙ্গে পুরসভা গঠনের উপযুক্ত পরিকাঠামোও তৈরি করা উচিত বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy