Advertisement
E-Paper

পায়রা নিয়ে বিবাদ, বেধড়ক মারে মৃত্যু প্রৌঢ়ের

রাস্তায় পড়ে থাকা একটি অসুস্থ পায়রাকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন এক প্রৌঢ়। সেবা শুশ্রূষা করার পরে খাটিয়ার পায়ার সঙ্গে পায়রাটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধেও রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও রকমে পায়ের বাঁধন খুলে পায়রাটি চলে গিয়েছিল প্রতিবেশী এক যুবকের বাড়িতে। আর এর পরেই পায়রার দখলদারি নিয়ে বিবাদ বেধে যায় দু’পক্ষের মধ্যে। সেই বিবাদ গড়ায় মারধরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০১:১৭
সেই পায়রা। —নিজস্ব চিত্র

সেই পায়রা। —নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় পড়ে থাকা একটি অসুস্থ পায়রাকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন এক প্রৌঢ়। সেবা শুশ্রূষা করার পরে খাটিয়ার পায়ার সঙ্গে পায়রাটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধেও রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও রকমে পায়ের বাঁধন খুলে পায়রাটি চলে গিয়েছিল প্রতিবেশী এক যুবকের বাড়িতে। আর এর পরেই পায়রার দখলদারি নিয়ে বিবাদ বেধে যায় দু’পক্ষের মধ্যে। সেই বিবাদ গড়ায় মারধরে। অভিযোগ, ওই প্রৌঢ়কে এমনই বেধড়ক মারধর করেছিলেন ওই যুবক যে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার একই ধরনের একটি ঘটনায় গার্ডেনরিচে পাড়ার কল থেকে জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষে বিবাদ বাধে। অভিযোগ, বিবাদের জেরে সঞ্জীব চৌধুরী নামে এক জন প্রতিবেশী মনোজ যাদবকে গুলি করে। হাসপাতালে মৃত্যু হয় মনোজের।

রবিবারের ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য হাওড়ার রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম নবরাজ সিংহ (৫৯)। তিনি হাওড়া পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে শরৎ সদনের কাছে রাস্তার পাশে একটা অসুস্থ গোলা পায়রাকে পড়ে থাকতে দেখে বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডের বাসিন্দা নবরাজবাবু। তিনি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে পায়রাটিকে সেবা-যত্নও করে বাঁচিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু কোনও এক সময়ে সকলের অলক্ষ্যে পায়রাটি উড়ে গিয়ে বসেছিল প্রতিবেশী যুবক নাগেশ্বর দাসের বাড়ির দালানে।

পুলিশ জানায়, গাড়ির চালক নাগেশ্বর বাড়িতে একাই থাকে। গত রবিবার সকালে সে পায়রাটি দেখতে পেয়ে দালানে বেঁধে রেখে কাজে বেরিয়ে যায়। রবিবার দুপুরে নবরাজ বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর উদ্ধার করা পায়রা বাঁধা রয়েছে নাগেশ্বরের দালানে। এই দেখে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পায়রাটির দড়ি খুলে ফের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে আসে নাগেশ্বরও। সে এসে দেখে, দালানে পায়রা নেই। খোঁজ নিয়ে সে জানতে পারে, পায়রা নিয়ে গিয়েছেন নবরাজবাবু। এর পরে সে প্রতিবেশী একটি শিশুকে নবরাজবাবুর কাছে পাঠায় পায়রাটি চেয়ে। কিন্তু নবরাজবাবু পায়রাটি ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। নবরাজবাবুর স্ত্রী কোরো দেবীর অভিযোগ, এর পরেই নাগেশ্বর তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। তাঁর স্বামীকে মাটিতে ফেলে মারধর করে। এতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করার পরে মারা যান।

এ দিন রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা তখনও কোরোদেবী এবং তাঁর মেয়ে ললিতাকুমারীকে ঘিরে রয়েছেন। খাটিয়ার পায়ায় তখনও বাঁধা রয়েছে পায়রাটি। কোরোদেবী বলেন, “নাগেশ্বর ওঁকে মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে গলা টিপে ধরে। এলোপাথাড়ি কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকে। আমি আর মেয়ে অনেক চেষ্টা করেও ওকে আটকাতে পারিনি।” পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকেই নাগেশ্বর পলাতক। তার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

nabaraj singha howrah round tank lane nageswar das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy