বোতল বোমা তৈরি করার সময়ে তা ফেটে গিয়ে গুরুতর জখম হলেন এক যুবক। সেই সঙ্গে উদ্ধার হল আরও এক ডজন তাজা বোতল বোমা।
সোমবার ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার ব্যাঁটরা এলাকার চ্যাটার্জিপাড়ায়। নির্বাচনের মাসখানেক আগে ওই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় যথারীতি তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আহত যুবকের নাম সমীর ভট্টাচার্য ওরফে পিন্টু (২৮)। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যুবকটির বাঁ হাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ৫৬/৩ নম্বর চ্যাটার্জিপাড়া লেনে পরপর দু’টি বিস্ফোরণে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। যেখানে বিস্ফোরণটি ঘটে, সেটি বাঁশ-টালির ছাউনি দেওয়া দরমা ঘেরা ঘর। ওই এলাকার একটি ঠিকা জমির শেষ প্রান্তে আধবোজা পরিত্যক্ত পুকুরের পাড়ে গড়ে ওঠা ওই ঘরে মুহূর্তে আগুন লেগে যায়। কালো ধোঁয়া আর বারুদের গন্ধে স্থানীয়েরা বেরিয়ে আসেন। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। বিশাল পুলিশবাহিনী এসে জখম যুবককে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার তদন্তে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তা ও নিজস্ব বম্ব স্কোয়াড। পরে খবর দেওয়া হয় সিআইডি-র বম্ব স্কোয়াডকে। তল্লাশি চালিয়ে পুকুরের ভিতরে বালির নীচ থেকে ১২টি তাজা বোতল বোমা উদ্ধার হয়। সিআইডি-র বম্ব স্কোয়াড সেগুলি নিষ্ক্রিয় করে।
যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে তার পাশের বাড়িতেই থাকেন অর্চনা দলুই। তাঁর কথায়, “পরপর দু’বার প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি, পুকুরপাড়ে দরমা ঘেরা ঘরটায় আগুন লেগে গিয়েছে। সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে পিন্টু।” এলাকাবাসীরা জানান, পিন্টু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তাঁর মায়ের সঙ্গে ওই জায়গায় ভাড়া থাকেন। কিন্তু তাঁরা কারও সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না। পিন্টু কোনও কাজকর্ম করত না। তবে কয়েক বছর আগে সে ‘জাতীয় দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতা’য় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিল। সে-ই আবার পুকুরপাড়ে অস্থায়ী ছাউনি বানিয়ে বোতল বোমা তৈরি করত জেনে বিস্মিত পাড়ার লোকেরাই। পিন্টুর মায়েরও খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, পিন্টু কিছু দিন ধরেই বোতল বোমা তৈরি করত বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আগামী নির্বাচনে গোলমাল বাধানোর জন্য ওই বোমাগুলি পাঁচলার দিকে সরবরাহ করার কথা ছিল বলেও জানা গিয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সদর নিশাত পারভেজ বলেন, “যুবকটি সুস্থ হওয়ার পরে আরও বিশদে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy