Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভেড়ি দখল নিয়ে লড়াই, জখম ছয়

মেছোভেড়ির দখল নিয়ে ক’দিন ধরেই দু’দল গ্রামবাসীর গোলমাল চলছিল দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েত এলাকায়। তার জেরে শনিবার সকালে বোমা-গুলির (ছর্রা) লড়াইয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ওই পঞ্চায়েতের মাঝেরপাড়া। আহত তিন মহিলা-সহ ছ’জন। ভাঙচুর চালানো হয় কয়েকটি বাড়িতে। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই কাণ্ড ঘটায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৪ ০২:৩৪
Share: Save:

মেছোভেড়ির দখল নিয়ে ক’দিন ধরেই দু’দল গ্রামবাসীর গোলমাল চলছিল দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েত এলাকায়। তার জেরে শনিবার সকালে বোমা-গুলির (ছর্রা) লড়াইয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ওই পঞ্চায়েতের মাঝেরপাড়া। আহত তিন মহিলা-সহ ছ’জন। ভাঙচুর চালানো হয় কয়েকটি বাড়িতে। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই কাণ্ড ঘটায়। ১০ জনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে সিপিএমের দাবি, ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। একই দাবি কিছু গ্রামবাসীরও।

ঘণ্টাখানেক ধরে এই তাণ্ডবের সময়ে আহতদের হাসপাতালেও নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দেগঙ্গা থানা থেকে প্রথমে কয়েক জন পুলিশকর্মী গিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং র্যাফ গিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ-প্রহরাতেই আহতদের স্থানীয় কার্তিকপুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

শুক্রবার বিকেল থেকেই পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল ওই এলাকায়। শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ শুরু হয়ে যায় বোমাবাজি ও গুলির (ছর্রা) লড়াই। তরোয়াল, ভোজালি নিয়ে গ্রামের রাস্তায় হামলাকারীদের দাপাদাপিতে আতঙ্ক ছড়ায়।

তৃণমূল কর্মী অলিউর রহমানের বাঁ হাতে ভোজালির কোপ পড়ে। বন্দুকের গুঁতোয় আহত হন আর এক তৃণমূূল কর্মী সাবের আলি। সিপিএম কর্মী আব্দুল বারিকের পিঠে বোমার স্প্লিন্টার লাগে। গোলমালের মধ্যে পড়ে যাওয়া এক বালককে উদ্ধার করতে গেলে রহিমা বিবি নামে এক মহিলাকে মারধর করা হয়। তৃণমূল সমর্থক নজরুল ইসলামের বাড়িতে লুঠপাট এবং ভাঙচুর চালানো হয়। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জামাল খান ঘরে পড়ছিল। জানলা দিয়ে সেই ঘরে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। গুরুতর আহত হয় জামাল। কয়েক জন মহিলার শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ বাহিনী এবং র্যাফ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে ধাওয়া করে দু’পক্ষকে হটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ওই এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি তাজা বোমা এবং গুলির খোল উদ্ধার করে।

মাঝেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজমিরা বিবি বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে আমরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছি, এই রাগে প্রায়ই সিপিএম হুমকি দিচ্ছিল। এ দিন ছেলেমেয়েরা যখন খেতে বসে, তখন ওরা বোমা-বন্দুক নিয়ে বাড়িতে ঢুকে লুঠপাট করে। আমাদের মারধরও করে।” আবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন, “একটি ভেড়ির দখল কাদের হাতে থাকবে, এ নিয়েই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চলছিল। এ দিন সেটাই বড় আকার নিল।”

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা আশাদুল ইসলামের অভিযোগ, “ভোটের পর থেকেই সিপিএম দুষ্কৃতীদের নিয়ে এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করছিল। এ দিন ওরাই হামলা করে।” পক্ষান্তরে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের ইমতিয়াজ হোসেনের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই ঘটনা।

অন্য দিকে, ক্যানিংয়ে ভেড়ির দখল নিয়ে হামলার ঘটনায় এ দিন পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। শুক্রবার রাতে ক্যানিংয়ের বক্রাবনিতে দলীয় বৈঠক করে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে তিন তৃণমূল কর্মী আহত হন। স্থানীয় এক ভেড়ির মালিক-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা পলাতক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

deganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE