পুষ্পবৃষ্টি করে, মাদল বাজিয়ে, তিরধনুক হাতে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যকে বরণ করে নিলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের কয়োকশো মানুষ। যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে সমর্থনের কথা ঘোষণা করতে শুক্রবার বসিরহাট টাউনহলে এক সভার আয়োজন করেছিল আদিবাসী জনকল্যাণ সমিতি। সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যকে। তিনি এলে কয়েকশো আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
স্বভাবতই উৎসাহিত শমীকবাবু বলেন, “ওঁদের এই অভ্যর্থনা জীবনে ভুলব না। আমি এবং আমার দল আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। আদিবাসীদের কল্যাণ ও তাঁদের উন্নয়নের কাজ করতে পারে একমাত্র মোদী সরকার।”
আদিবাসী সংগঠনের পক্ষে সুকুমার হাঁসদা বলেন, “অধিকাংশ দলই আদিবাসীদের কেবল ব্যবহার করেছে। কিন্তু আমরা বুঝেছি, একমাত্র বিজেপিই আমাদের স্বার্থরক্ষা করতে পারে।”
সভার পরে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়েই প্রচারে নেমে পড়েন শমীকবাবু। বিজেপি প্রার্থীকে সাইকেল রিকশায় বসিয়ে নিজেই তা চালাতে শুরু করেন এক আদিবাসী মহিলা। ঘটনাটিকে আদিবাসীদের ভালবাসার ছোঁওয়া বলে উল্লেখ করে শমীকবাবু বলেন, “এতেই বোঝা যায় বাংলার মা-বোনেরা বিশ্বাস করেন, কেউ যদি তাঁদের নিরাপত্তা দিতে পারেন তবে সেই দল হল বিজেপি।” আরও বলেন, “এ রাজ্যে আদিবাসীদের উপরে আক্রমণ, বিরোধীদের প্রতিহত করতে ধর্ষণ একটা রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার।”
সভায় আসার পথে বিরোধীরা তাদের বাধা দিয়েছে বলে আদিবাসী মানুষজন অভিযোগ করলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শমীকবাবু। তিনি বলেন, “বিজেপিকে কংগ্রেস বলে মনে করবেন না, যে হাতে চুড়ি পড়ে রাজনীতি করবে। আক্রান্ত হলে আমরাও লড়াই করতে জানি। কোথাও আমাদের ফেস্টুন-পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছে। কোথাও প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন আমাদের ধৈর্য্যের একটা সীমা রয়েছে। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্র হরণ করেছেন।” জনতার উদ্দেশে বিজেপি প্রার্থী বলেন, “আর মাত্র কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন। দেখবেন ১৬ মে’র পর এই সব সাহেবদের আর ময়দানে দেখা যাবে না।”
সম্প্রতি বিভিন্ন সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি-কে দাঙ্গার মুখ বলে মন্তব্য করেছেন। এ দিন সেই প্রসঙ্গে শমীকবাবু বলেন, “আমাদের কেবল বলা হচ্ছে দাঙ্গার মুখ। আমাদের লড়াই কিন্তু দারিদ্রের সঙ্গে। যাঁরা ওপারে মার খেয়ে, ধর্ষিতা হয়ে সর্বস্ব খুইয়ে উদ্বাস্তু হয়ে এপারে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের আমরা নাগরিকত্ব দিতে চাই।”
কিন্তু বিজেপি- কেই সমর্থন কেন?
প্রশ্নের উত্তরে রিকশা টানতে টানতেই ফুলমণি টুডুর মন্তব্য, “শমীকদা বলেছেন আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন। আমাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হবেন। তাই তো আমরা সকলে বিজেপি-কে সমর্থনের প্রতিজ্ঞা করেছি।