Advertisement
E-Paper

যুবকের তৎপরতায় উদ্ধার পাঁচ বালক

ট্রেনের কামরায় বছর বারো-তেরোর পাঁচ বালক নিজেদের মধ্যে গল্পে মশগুল। সকলেরই চুল একই কায়দায় ছোট করে ছাঁটা। পাশেই বসে তাদের ‘মামা’। বালকদের সঙ্গে কেউ কথা বলার চেষ্টা করলেই তিনি বাধা দিচ্ছেন। সোমবার সন্ধ্যায় চলন্ত ট্রেনে বহু ক্ষণ এই দৃশ্য দেখার পরে মথুরাপুরের বাসিন্দা, সৌমেন হালদার নামে এক যাত্রী ফোন করে দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ড লাইনে।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩১

ট্রেনের কামরায় বছর বারো-তেরোর পাঁচ বালক নিজেদের মধ্যে গল্পে মশগুল। সকলেরই চুল একই কায়দায় ছোট করে ছাঁটা। পাশেই বসে তাদের ‘মামা’। বালকদের সঙ্গে কেউ কথা বলার চেষ্টা করলেই তিনি বাধা দিচ্ছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় চলন্ত ট্রেনে বহু ক্ষণ এই দৃশ্য দেখার পরে মথুরাপুরের বাসিন্দা, সৌমেন হালদার নামে এক যাত্রী ফোন করে দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ড লাইনে। তাঁর সন্দেহ হয়, ওই বালকদের পাচার করা হচ্ছে। আসে রেল পুলিশ। ওই যুবকের তৎপরতাতেই দক্ষিণ শহরতলির দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে ডাউন নামখানা লোকাল থেকে উদ্ধার করা হল ওই পাঁচ বালককে। কিন্তু তাদের ‘মামা’কে রেল পুলিশ ধরতে পারেনি। কামরায় রেল পুলিশকে উঠতে দেখেই তিনি গা ঢাকা দেন। ওই রাতেই রেল পুলিশ বালকদের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয়। মঙ্গলবার চাইল্ড লাইনের তরফে ওই বালকদের জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন বিজলি মল্লিকের কাছে পাঠানো হয়। রেল পুলিশ জানিয়েছে, ওই বালকদের ‘মামা’র খোঁজ শুরু হয়েছে।

রেল পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া ওই পাঁচ বালক জানিয়েছে, মাস দুয়েক আগে তাদের বাবা-মা কলকাতার মেটিয়াবুরুজে দর্জির কাজ শেখার জন্য তাদের রেখে আসেন। তাদের কারও বাড়ি ডায়মন্ড হারবারে, কারও রায়দিঘিতে। মেটিয়াবুরুজেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় তাদের। ‘মামা’ বলে তাকে ডাকত তারা। তাদের কাজ করতে ভাল লাগত না বলে ‘মামা’ই তাদের নামখানায় মেলা দেখাবে বলে নিয়ে যাচ্ছিল। জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অয়ন বৈদ্য ও অভিজিৎ বসু বলেন, “এক যাত্রীর ফোনে জানতে পারি, পাঁচটি বালককে পাচার করা হচ্ছে। রেল পুলিশের সাহায্যে তাদের উদ্ধার করা হয়।”

জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন বিজলিদেবী বলেন, “শিশু-শ্রমিক হিসেবে ওরা কাজ করছিল। তাই এখনই ওদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। আপাতত ১৫ দিন একটি হোমে রেখে ওদের কাউন্সেলিং করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চাইল্ড লাইনকে। তার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

বছর তিরিশের সৌমেন নিজে একটি পাচার-বিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি মথুরাপুর যাবেন বলে বালিগঞ্জ ওই ট্রেনে উঠেছিলেন। বালকদের পাশে বসা ওই ‘মামা’র আচরণ দেখেই তাঁর প্রথমে সন্দেহ হয়। সৌমেনের কথায়, “ছেলেগুলোর সঙ্গে কেউ কথা বলার চেষ্টা করলেই লোকটা বাধা দিচ্ছিল। আমিও চেষ্টা করে পারিনি। তখনই মনে হল, ওদের পাচার করা হচ্ছে না তো! আমার কাছে চাইল্ড লাইনের ফোন নম্বর ছিল। ফোন করি।” কিন্তু দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে ওই বালকদের ‘মামা’কে তিনি আটকানোর চেষ্টা করলেন না কেন? সৌমেন বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, শিশুদের উদ্ধার করা। লোকটির সঙ্গে দলবল ছিল কি না, জানতাম না। তাই লোকটাকে আটকাইনি।”

samsul huda canning soumen halder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy