Advertisement
E-Paper

হিঙ্গলগঞ্জের প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিলেন নতুন সাংসদ

ত্রাণ নিয়ে বুধবার হিঙ্গলগঞ্জের প্লাবিত এলাকায় গেলেন বসিরহাটের তৃণমূলের জয়ী সাংসদ ইদ্রিস আলি। গত ১৮ মে, রবিবার সকালে কালিন্দী নদীর বাঁধ ধসে প্লাবিত হয় কালীতলা পঞ্চায়েতের বেশ কিছু অংশ। স্থানীয় সামসেরনগর ১, হরিদাসকাটি ও কালীতলা গ্রামের একাংশ প্লাবিত হয়। সরকারি হিসেবে ১৪০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:৩৭
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখছেন ইদ্রিস। ছবি: নির্মল বসু।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখছেন ইদ্রিস। ছবি: নির্মল বসু।

ত্রাণ নিয়ে বুধবার হিঙ্গলগঞ্জের প্লাবিত এলাকায় গেলেন বসিরহাটের তৃণমূলের জয়ী সাংসদ ইদ্রিস আলি।

গত ১৮ মে, রবিবার সকালে কালিন্দী নদীর বাঁধ ধসে প্লাবিত হয় কালীতলা পঞ্চায়েতের বেশ কিছু অংশ। স্থানীয় সামসেরনগর ১, হরিদাসকাটি ও কালীতলা গ্রামের একাংশ প্লাবিত হয়। সরকারি হিসেবে ১৪০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি।

বুধবার সকালে ৩০ বস্তা মূুড়ি, ১০ টিন গুড়, ২০ কুইন্টাল চিঁড়ে, ৩০ কুইন্টাল চাল ও দেড়শো পলিথিন নিয়ে এলাকায় যান ইদ্রিস। জেলা পরিষদের সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল ও বিডিও বিশ্বজিৎ বসুও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। পার হাসনাবাদে পৌঁছতেই ইদ্রিসকে অভ্যর্থনা জানাতে ফুল, মালা, শাঁখ নিয়ে চলে আসেন মহিলারা। সাংসদকে বরণ করার জন্য রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়েছিলেন বনতলা, লেবুখালি, পঞ্চপল্লি এলাকার মানুষ। পঞ্চপল্লিতে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন ইদ্রিস। সেখানে এলাকার ১২০ জন ভ্যান রিকশা চালক তৃণমূলে যোগ দেন।

হরিদাসকাটি গ্রামে গিয়ে এ দিন ইদ্রিস বলেন, “কথা দিয়েছিলাম, ভোটে জিতলে সুন্দরবনের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করব। তাই অসুস্থ শরীরে ছুটে এলাম।”

হাসনাবাদের কাঁটাখালি নদীর উপরে সেতুর কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সুন্দরবনের মানুষের পানীয় জলের ব্যাপারে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যের বাম সরকার সুন্দরবন এলাকায় নদী বাঁধের জন্য কয়েকশো কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিল। তার পরেও বাঁধ কী করে ধসে গেল?” বাম নেতৃত্বরা বিষয়টি নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে সমালোচনা করে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায় করবেন তিনি। এ দিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সাড়ে ছ’শো বাসিন্দাকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।

আয়লা পরবর্তী পর্যায়ে সুন্দরবন লাগোয়া হরিদাসকাটি গ্রামে কালিন্দী নদীর উপর চওড়া বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগেই। রবিবার তার মধ্যেই হঠাৎ পুরনো বাঁধটি জলের চাপে বসে যায়। জল ঢুকিয়ে পড়ে গ্রামের ভিতরে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান লোকজন নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও পারেননি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাসিন্দারা অনেকেই সংসারের জিনিসপত্র ও গবাদি পশু নিয়ে রাস্তার উপরে বা গ্রামের উঁচু অংশে আশ্রয় নেন।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রিং বাঁধে মাটি ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। জল আগের তুলনায় কিছু কম হলেও বাড়িগুলির অবস্থা একই রকম। কয়েকটা মাটির বাড়ি ইতিমধ্যে পড়ে গিয়েছে। তবে বাসিন্দারা অনেকেই বাড়ি ফিরে এসেছেন। কিন্তু জ্বালানি ও অন্যান্য জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রায় না খেয়েই দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁদের একাংশ।

হরিদাসকাটি গ্রামের বাসিন্দা সীতা বাউড়ি বলেন, “আয়লায় সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। অনেক কষ্ট করে ফের একটু একটু করে সংসার সাজাচ্ছিলাম। আবার আমাদের ভাসতে হল। বাঁধ দেওয়ার নামে আমাদের সঙ্গে বার বার প্রতারণা করা হয়েছে।”

গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “নতুন সরকার কংক্রিটের বাঁধ দেওয়া শুরু করেছে। ভাঙনের পরেই রিং বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন ত্রাণ পেলাম। দেখা যাক, এই বার আমাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয় কিনা।”

hingalganj hooded area relief
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy