E-Paper

মেয়েকে দেখভালের কথাই কি দুই ঘনিষ্ঠকে বলে যান কেষ্ট? শক্তিগড় সমাচারে জল্পনা

জেলে যাওয়ার পর থেকে মেয়ের ব্যাপারে উদ্বেগে ছিলেন অনুব্রত। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই উদ্বেগ নিয়েই মঙ্গলবার তুফান এবং কৃপাময়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

বাসুদেব ঘোষ 

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৭
Picture of Anubrata Mondal.

শক্তিগড়ে খাবার টেবিলে অনুব্রতর সঙ্গে কৃপাময় ঘোষ এবং গাড়িচালক তুফান মির্ধা। ফাইল চিত্র।

তাঁকে তখন কলকাতা নিয়ে যাচ্ছিল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে প্রাতরাশের জন্য গাড়ি থামে। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে খাবার টেবিলে দেখা যায় দুই ‘বহিরাগতকে’। কারা তাঁরা? বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দিল্লি যাওয়ার প্রাক্কালে কী-ই বা বলে গেলেন সেই দু’জনকে, এই নিয়ে সব মহলেই চর্চা শুরু হয়েছে। সূত্রের দাবি, ওই দু’জন হলেন অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কৃপাময় ঘোষ এবং অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যার গাড়িচালক তুফান মির্ধা। বিশ্বস্ত সূত্রে আরও দাবি করা হয়, মেয়েকে দেখভাল করার কথা তাঁদের বলে যান অনুব্রত। বলে যান বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকায় নিজের বাড়ি এবং পার্টি অফিস দেখাশোনা করার কথাও।

জেলা তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, স্ত্রী বিয়োগের পর থেকে মেয়েই অনুব্রতের ভরসাস্থল। তাই জেলে যাওয়ার পর থেকে মেয়ের ব্যাপারে উদ্বেগে ছিলেন তিনি। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই উদ্বেগ নিয়েই মঙ্গলবার তুফান এবং কৃপাময়ের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ফিরতে পারবেন কি না, ফিরলেও তত দিন পর্যন্ত মেয়ের কী হবে, সেই সব নিয়ে অনুব্রত যে চিন্তিত, সে কথা এর আগেও জেলা তৃণমূল নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে ইঙ্গিত, তিনি তাঁর না-ফেরা পর্যন্ত তুফানকে মেয়ে সুকন্যার দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন অনুব্রত। কৃপাময়কে বোলপুর শহরের নিচুপট্টি এলাকায় নিজের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ের দেখভালের কথা বলেছেন। কার্যালয়ে যাতে ঠিকমতো কাজ হয়, শোনা যাচ্ছে, সেই পরামর্শও তিনি কৃপাময়কে দিয়েছেন।

তুফান বোলপুরের কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা। কৃপাময়ের বাড়ি শহরের বাঁধগোড়া এলাকায়। দু’জনেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন। বুধবার দু’জনেই বোলপুরে ছিলেন বলে দলের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে। কিন্তু, কৃপাময়ের ফোন বন্ধ ছিল। তুফানের সঙ্গেও অনেক চেষ্টা করে যোগাযোগ করা যায়নি। দলীয় কার্যালয়েও তাঁদের দেখা মেলেনি।

এই দু’জন কী ভাবে পুলিশি ঘেরাটোপে থাকা অনুব্রতের সঙ্গে এসে দেখা করলেন, তা নিয়ে এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের ভূমিকা। কারণ, আদালতের নির্দেশ মতো আসানসোল জেল থেকে কলকাতা নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তার পরে ইডি-র হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল কমিশনারেটের। বিষয়টি নিয়ে কমিশনারেট কার্যত কিছু বলতে চায়নি।

এ দিকে, আসানসোল জেলের কর্মীদের একাংশের দাবি, সোমবার দুপুর থেকেই অনুব্রত জানতে চাইছিলেন, তাঁকে দিল্লি পাঠানোর বন্দোবস্ত হচ্ছে কি না। সন্ধ্যায় ওয়ার্ড পরিদর্শনের পরে জেল কর্তৃপক্ষ অনুব্রতকে জানিয়ে দেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে তাঁকে কলকাতা হয়ে দিল্লি রওনা করানো হবে।

কিন্তু অনুব্রত কখন শক্তিগড়ের কোন দোকানে প্রাতরাশ করবেন, এটা কী করে জানতে পারলেন কৃপাময় ও তুফান— সেই প্রশ্নও এখন ঘুরছে সব মহলে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Anubrata Mondal TMC Enforcement Directorate Sukanya Mondal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy