২০১৯ সালে বিশ্বভারতীতে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। বিশ্বভারতীর নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগামী ১০ জুন পর্যন্ত একাদশ শ্রেণি, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি, সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা এবং অ্যাডভান্স ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে।
তবে আবেদন-ফি এ বছর বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন যাঁরা ভর্তি হবেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও ভর্তির ফি গতবারের তুলনায় কিছু বাড়বে বলে খবর। আপাতত, আবেদনের ফি দেখেই মাথায় হাত কিছু ছাত্রছাত্রীরা। একাধিক বিষয়ে কী ভাবে আবেদন করবেন, ভাবছেন তাঁরা। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভও জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ পড়ুয়াদের একাংশ।
কেন দ্বিগুণ হল?
বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক জানান, ইউজিসি থেকে নিজেদের তহবিল নিজেদেরকেই তৈরি করতে হবে এমন নির্দেশ আছে। সেই কারণে ‘সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন কমিটি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবেদনের ফি বাড়ানো হয়েছে। গত আট বছরে ভর্তির ফি বাড়েনি। এ বছর তাই নতুন যাঁরা ভর্তি হবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভর্তি-ফি বাড়বে। হঠাৎ করে আবেদন-ফি দ্বিগুণ হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ কিছু পড়ুয়া। তাঁদের দাবি, স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তরে তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই ভর্তি হতে পারেন। কিন্তু, তার জন্য আবেদন করতেই ১০০০ টাকা লাগবে। বিশ্বভারতীতে ভর্তির জন্য সে ভাবে কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষাও নেওয়া হয় না। আবেদন-ফি হঠাৎ করে দ্বিগুণ না করে ধাপে ধাপে করতে পারতেন কর্তৃপক্ষ।
পড়ুয়াদের সঙ্গে একমত বিশ্বভারতীর কর্মিসভা। কর্মিসভার সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী এমন একটা জায়গা, যেখানে এক দিকে যেমন বিদেশের ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসেন, অন্য দিকে গ্রাম বাংলার একটা বড় অংশ এখানে পড়েন। তাই হঠাৎ করে আবেদন-ফি দ্বিগুণ না করে কিছুটা বাড়ালে ভাল হতো। পরের বছর আরও কিছুটা বাড়ানো যেত। তাতে এত বড় ধাক্কা লাগত না।’’ অধ্যাপকসভার সহ-সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সব কিছুরই বাজার মূল্য বাড়ছে। এই ফি বাড়াও জরুরি ছিল। বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আছি আমরা।’’ বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য এবং সদস্য বিকাশরঞ্জন গুপ্তের কথায়, ‘‘এ বছর আবেদন ফি বাড়ল ঠিকই। কিন্তু এই ফি হয়তো বেশ কয়েক বছর একই থেকে যাবে। সুতরাং এতে সমস্যার কিছু দেখছি না।’’
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে সাধারণ এবং ওবিসি আবেদনকারীদের জন্য আবেদন-ফি ছিল ৫০০ টাকা। এসসি, এসটি ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য ফি ছিল ১৫০ টাকা। একটা বিষয়ে আবেদন করার পরে দ্বিতীয় বিষয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে সাধারণ, ওবিসিদের ২০০ টাকা এবং এসসি, এসটি ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ৭৫ টাকা বেশি দিতে হতো। এ বছর সাধারণ এবং ওবিসি ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবেদন ফি করা হয়েছে ১০০০ টাকা। একই সঙ্গে ‘ইকনোমিক্যালি উইকার সেকশন’ (ইডব্লিউএস) এর জন্য আবেদন ফি রয়েছে ১০০০ টাকা।
অন্য দিকে, এসসি, এসটি এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের আবেদন-ফি করা হয়েছে ৩০০ টাকা। প্রথম বিষয়ে আবেদন করার পরে আলাদা করে অন্য কোনও বিষয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে সাধারণ, ইডব্লিউএস এবং ওবিসি পড়ুয়াদের ৪০০ টাকা বেশি দিতে হবে। এসসি, এসটি এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ১৫০ টাকা বেশি দিতে হবে। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় সব ক্ষেত্রেই আবেদন-ফি দ্বিগুণ হয়েছে। শুধু ভারতীয় পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে নয়। ফি বেড়েছে সার্ক এবং নন-সার্ক বিদেশি পড়ুয়াদের আবেদনের ক্ষেত্রেও। অ্যাডমিশন-ফি বাড়ার ফলে এ বারে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও অন্য বারের তুলনায় বেশি টাকা দিতে হবে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy