একুশে স্মরণের তৃণমূল-মঞ্চে সিপিএমের দীপালি বিশ্বাস। পিছনে অরূপ বিশ্বাস। ছবি: সুদীপ আচার্য
দল ছেড়ে বিধায়ক পদও ছেড়ে দিতে রাজি দীপালি বিশ্বাস। মালদহের গাজলের সিপিএম বিধায়ক দীপালিদেবী বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় শহিদ দিবস মঞ্চে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। দলত্যাগ করায় তাঁকে বেইমান বলে কটাক্ষ করেছেন মালদহের বাম কংগ্রেস নেতারা। বাম ও কংগ্রেস নেতাদের দাবি, মন্ত্রী হওয়ার লোভেই দলত্যাগ করেছেন তিনি।
দীপালি মালদহেরই ইংরেজবাজারের কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর মতো দল ছেড়ে দেওয়ার পরে বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘উপনির্বাচনের লড়াইয়ের জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’’ কিন্তু স্থানীয় সূত্রে দাবি, এ বার তাঁর পক্ষে জয় সহজ হবে না। সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, মুর্শিদাবাদের হুমায়ুন কবীরের মতোই দীপালিদেবীকেও উপনির্বাচনে হেরে যেতে হবে। এই এলাকায় সিপিএমের প্রভাব রয়েছে। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের প্রভাবও কম নয়। এ বার বিধানসভা ভোটে সিপিএম-কংগ্রেস জোট থাকায় দীপালিদেবীর পক্ষে জয় সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এ বার সেই একই জোট তাঁকে হারিয়ে দেবে বলে বিরোধীদের দাবি।
জেলা বামফ্রন্টের নেতা জীবন মৈত্র বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে বেইমানি করেছেন দীপালীদেবী। যার জবাব উপনির্বাচনে মানুষ তাঁকে দেবেন। কারন বিধায়ক দলত্যাগ করলেও মানুষ দলত্যাগ করেননি।’’ জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নূরও বলেন, ‘‘বেইমানদের জবাব দিতে গাজলের মানুষ জানেন।’’
কিন্তু বামেরা কেন দীপালিদেবীকে ধরে রাখতে পারল না? তার উত্তর দিয়েছেন দীপালি নিজেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদের সদস্য থাকলেও মানুষের জন্য কোন কাজই করতে পারিনি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আমি উপনির্বাচনে লড়তে রাজি রয়েছি।’’
বাম কংগ্রেস নেতৃত্বের কটাক্ষকেও আমল দিতে নারাজ দিপালী। তিনি বলেন, ‘‘বাম কিংবা কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ নেই আমার। আমি কেবল মাত্র উন্নয়মের স্বার্থেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’
মালদহ জেলায় এ বার খাতা খুলতে পারেনি তৃণমূল। জেলাতে ১২টি আসনেই জয়ী হন বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থীরা। ফলে তৃণমূল শূন্য জেলাতে দল ভাঙার আশঙ্কা করছিলেন বিরোধী দলের নেতা নেতৃত্বরা। গত ২৯ মে মালদহ টাউন হলে জেলার বিধায়কদের সংবর্ধনা দেন বাম কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই সভায় জেলার ১১ জন বিধায়ক মিলে দলীয় কর্মীদের সামনে দল বদল না করার শপথ নিয়েছিলেন।
তার দু’মাস পরে দল বদল করলেন গাজলের নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দীপালি। তিনি জেলা পরিষদের সদস্যও। তাঁর স্বামী রঞ্জিত বিশ্বাস সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য। একই সঙ্গে তিনি সিপিএমের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও গাজল লোকাল কমিটির সম্পাদকও।
তবে স্থানীয় বামপন্থী নেতাদের অনেকে দীপালিদেবীর প্রার্থী হওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। তাই নিয়ে দলে ক্ষোভও ছিল। তবে দীপালি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় দল আরও শক্তিশালী হল বলে দাবি করেন জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন।
নির্বাচনের পর গাজলে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় বিধায়ক দিপালী দেবীর কলেজ পড়ুয়া ছেলে ছেলে পিন্টু বিশ্বাসের।
তাঁর নামে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রয়েছে। পুলিশের কাছে অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। ঘনিষ্ঠ মহলে দিপালী জানিয়েছেন, ‘‘যখন নিজের ছেলেকেই মিথ্যে মামলা থেকে বাঁচাতে পারলাম না বিধায়ক হয়ে, তখন সাধারণ মানুষকে কী পরিষেবা দেব?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy