মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। ছবি: পিটিআই।
ভোটের সময়ে অসৎ উদ্দেশ্যে নেওয়া পদক্ষেপ করলে বা পক্ষপাতিত্ব দেখালে ছাড় পাবেন না কোনও জেলাশাসক বা পুলিশ কর্তা। বৃহস্পতিবার কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে ডিএম-এসপি, কমিশনারদের বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা এই মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, এ বার বাংলার ভোটে বিশেষ নজর থাকবে নির্বাচন সদনের। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘সৎ উদ্দেশ্যে কিছু করতে গিয়ে ভুল হলে কমিশন আপনাদের রক্ষা করবে। কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলে কমিশন সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে দেবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে। তা সবাইকে জানিয়েও দেওয়া হবে।’’
বৈঠকের শুরু থেকেই দুই কমিশনার অরোরা এবং অশোক লাভাসা কড়া মেজাজে ছিলেন। তাঁরা দেখেন, অনুপস্থিত রয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। তখন জানতে চান, কলকাতা পুলিশ কমিশনার কোথায় আছেন? উঠে দাঁড়ান কলকাতা পুলিশের বিশেষ কমিশনার জয়ন্ত বসু। নিজের পরিচয় দেন তিনি। সেই সময়ে জয়ন্তবাবুর কাছে কমিশন জানতে চায়, তিনি কমিশনারের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন না কি তিনি দায়িত্বে রয়েছেন? জয়ন্তবাবু জানান, কমিশনার ছুটিতে রয়েছেন, তিনি তাঁর প্রতিনিধিত্ব করছেন। সেই সময়ে রাজ্যের নির্বাচন সংক্রান্ত নোডাল অফিসার এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মাকে জানাতে বলেন, কেন পুলিশ কমিশনার নেই? কমিশনের বৈঠক চলার সময়েই রাজীব কুমারকে কলকাতা বইমেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা গিয়েছে।
এতেই ক্ষান্ত হয়নি কমিশনের ফুল বেঞ্চ। পুলিশ সুপারেরা তাঁদের রিপোর্টে জানান, প্রতিটি জেলায় গড়ে হাজার দু’য়েক করে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা যায়নি। অরোরা এডিজির (আইনশৃঙ্খলা) কাছে জানতে চান, যাদের ক্ষেত্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শর্মা জানান, ওদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া, ঘোষিত অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা হবে। অরোরা বলেন, ‘সবই তো করবেন বলছেন! করছেনটা কী?’ অনুজ জানান, তিনদিনের মধ্যে সব রিপোর্ট দেওয়া হবে।
দুই কমিশনার জানিয়ে দেন, সারা দেশের ভোটই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলায় কেমন ভোট হচ্ছে, তার দিকে সারা দেশের নজর থাকবে। এমনকি, বিদেশে বসেও অনেকে বাংলার ভোটে নজর রাখবে। রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল এই রাজ্যের ভোটে তাই কমিশনের বিশেষ নজর থাকবে বলে জানান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘ভোট হতে হবে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, নৈতিক এবং সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য।’ এরপরেই অতীতের কয়েকটি ভোট নিয়ে রাজ্যের যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, সে প্রসঙ্গ তোলেন কমিশনাররা। তাঁরা ডিএম-এসপিদের বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলি যা বলল, আপনারা যা বলছেন তাতে কোনও মিল নেই। বরং উল্টো শুনছি। ভোট যত এগিয়ে আসবে, ততই রাজনৈতিক দল এবং আপনাদের বক্তব্যের ফারাক কমাতে হবে।’’ তা করার জন্য সমস্ত স্তরে কর্মীদের প্রশিক্ষণ, প্রতিটি থানা এলাকায় ভিভিপ্যাটের প্রচার, প্রতিবন্ধীদের ভোট দেওয়ার সুগম ব্যবস্থা এবং ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy