Advertisement
E-Paper

মশার দাপট, ভয় পাচ্ছেন ডাক্তাররাই

দাসপুর-২ ব্লকের রানিচক গ্রামে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা আগেই একশো ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গি আক্রান্তও বেশ কয়েকজন। রানিচক সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামেও আরও ৭০-৮০ জন জ্বরে আক্রান্ত।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৮
অপরিষ্কার:  হাসপাতাল চত্বরে জমে আবর্জনা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

অপরিষ্কার:  হাসপাতাল চত্বরে জমে আবর্জনা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

হাসপাতাল চত্বরে সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা খোলা। সেখানে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। মশার দাপটে দাসপুরের সোনাখালি গ্রামীণ হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে রাউন্ডে যেতে ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসকেরাই। মশার উপদ্রবে নাজেহাল রোগীরাও।

দাসপুর-২ ব্লকের রানিচক গ্রামে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা আগেই একশো ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গি আক্রান্তও বেশ কয়েকজন। রানিচক সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামেও আরও ৭০-৮০ জন জ্বরে আক্রান্ত। জ্বরে আক্রান্তরা আরোগ্য লাভের জন্য যে হাসপাতালে যাচ্ছেন, সেই সোনাখালি হাসপাতালের স্বাস্থ্যই বেহাল! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক তো বলেই ফেললেন, “বিকেলের পর হাসপাতালে রাউন্ডে যেতেই ভয় পাই। জ্বর নিয়ে বহু রোগী ওই হাসপাতালে ভর্তি। মশার কামড় থেকে রেহাই নেই তাঁদেরও।”

শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়েও জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জ্বরে ভুগছেন ওই জেলার গাইঘাটা ও দেগঙ্গার বিএমওএইচ-ও। ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রতিনিয়ত প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে দাসপুরের হাসপাতাল চত্বরেই মশার আঁতুড়ঘর! হাসপাতালের পরিকাঠামোরও হাঁড়ির হাল। মোট পাঁচ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র দু’জন চিকিৎসক। প্যাথোলজি বিভাগে বিশেষজ্ঞ কর্মীর অভাবে রক্ত পরীক্ষা করাতে এসেও ঘুরে যেতে হচ্ছে রোগীদের।

হাসপাতালের অব্যবস্থার কথা মেনে নিচ্ছেন বিএমওএইচ সন্তু ঘোষও। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “দীর্ঘদিন ওই হাসপাতালে কোনও সাফাই কর্মী নেই। ফলে আমার কী করার আছে?” যদিও সন্তুবাবুর আশ্বাস, “মাঝে মধ্যেই অস্থায়ী মজুর লাগিয়ে হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার করা হয়। তবে সবসময় তা সম্ভব হয় না।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মীর সঙ্কট রয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে।’’

ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতের লক্ষাধিক মানুষ সোনাখালি গ্রামীণ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে দু’শো থেকে আড়াইশো রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। ৩০ শয্যার অন্তর্বিভাগেও ভর্তি থাকেন অনেক রোগী। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের প্যাথোলোজি বিভাগের সামনেই ডাঁই হয়ে পড়ে থাকে গজ-ব্যান্ডেজ থেকে নোংরার স্তুপ। হাসপাতাল চত্বরে নেই স্থায়ী কোনও ভ্যাট। দাসপুরের আজুড়িয়ার বাসিন্দা কার্তিক মণ্ডল, আরতি
জানা জ্বরের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁদের প্রশ্ন, “বাড়ির চারিদিক পরিষ্কার রাখতে এত প্রচার হচ্ছে। তা হলে হাসপাতালে এই অব্যবস্থা কেন?”

হাসপাতাল লাগোয়া আবাসন এলাকারও একই হাল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, “এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার করছি। অথচ হাসপাতাল চত্বরে মশার বাড়বাড়ন্ত দেখে অবাক হতে হয়।”

Doctors Dengue ডেঙ্গি Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy