Advertisement
E-Paper

ছাত্রভোট হবে কি না, সংশয় মন্ত্রীর মন্তব্যে

‘‘আইন বদল হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ছাত্র সংসদ হোক বা ছাত্র কাউন্সিল, মেয়াদ হবে দু’বছর। আমরা ঠিক করে দিয়েছিলাম যে, এক জেলায় একই দিনেই ভোট করতে হবে। কিন্তু শিক্ষা দফতর তো একক ভাবে কিছু করতে পারবে না। এর সঙ্গে জেলা প্রশাসনেরও সাহায্য চাই,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৪

রাজনৈতিক ছাত্র সংসদ না অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল, তা নিয়ে টানাপড়েন বহাল রয়েছে। তারই মধ্যে চলতি শিক্ষাবর্ষে রাজ্যে ছাত্র নির্বাচন আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে ঘোরতর সংশয় দেখা দিয়েছে।

সংশয় ঘোরালো হয়েছে মূলত দু’টি কারণে। প্রথমত, নিয়মমাফিক নির্বাচনের জন্য সাধারণ ভাবে নভেম্বরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এ বার তা দেওয়া হয়নি। দ্বিতীয়ত, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যার জেরে ছাত্র নির্বাচনের সম্ভাবনা আরও অনিশ্চয়তার জায়গায় চলে গিয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগে এক বছর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ছাত্রভোট করতে হবে। তার মানে এই নয় যে, ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই তা করাতে হবে। এর মধ্যে অনেক বিষয় রয়েছে। ‘‘আইন বদল হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ছাত্র সংসদ হোক বা ছাত্র কাউন্সিল, মেয়াদ হবে দু’বছর। আমরা ঠিক করে দিয়েছিলাম যে, এক জেলায় একই দিনেই ভোট করতে হবে। কিন্তু শিক্ষা দফতর তো একক ভাবে
কিছু করতে পারবে না। এর সঙ্গে জেলা প্রশাসনেরও সাহায্য চাই,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, দু’বছর অন্তর ছাত্রভোট করার উপরে মন্ত্রী যে-ভাবে জোর দিয়েছেন, তাতে সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছে যে, এ বছর ভোট হচ্ছে না। সরকার কয়েক বছর ধরে ছাত্রভোটের বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে নভেম্বরে। তাতে জানানো হয়, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভোট পর্ব শেষ করে ছাত্র সংসদ গড়তে হবে। সে-ভাবেই চলছিল। নয়া বিধি অনুযায়ী এ বছর অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার কথা। তার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন বন্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় পথে নামছে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের সমর্থক পড়ুয়া মহল।

রাজনৈতিক শিক্ষা-মহলের মনে করছে, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভোট না-হলে চলতি শিক্ষাবর্ষে আর ছাত্র নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কারণ, জানুয়ারিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য শাখার স্নাতক স্তরের সেমেস্টার পরীক্ষা। মার্চ থেকে এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার পরেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা পরের পর। এরই মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা। এর মাঝখানে নতুন করে ছাত্রভোট ঘিরে গোলমালের ঝুঁকি নেবে না সরকার। শিক্ষাজগতের পর্যবেক্ষণ, মন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট, নতুন বিধিতে ভর করেই রাজ্য এ বছরের মতো ছাত্র নির্বাচন স্থগিত করে দিতে চলেছে।

অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের বিরোধিতায় যাদবপুরের উপাচার্যকে রাতভর ঘেরাও করে পড়ুয়ারা। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে গিয়ে পুরনো ব্যবস্থা বজায় রাখার দাবি জানায় তারা। কিন্তু সুরাহা হয়নি। প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের একাংশও ছাত্র কাউন্সিলের বিরোধিতায় আন্দোলনে নেমেছে।

যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অভীক দাসের অভিযোগ, ছাত্র কাউন্সিল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার ছাত্রদের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এ বার তারা যদি ছাত্রভোটই বন্ধ করে দেয়, তা হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। প্রেসেডিন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের তরফে অরিন্দম দোলই বলেন, ‘‘অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল আমরা মানব না। যদি ভোট না-হয়, তা হলে আমরা আন্দোলনের পথে যাচ্ছি।’’ তাঁরা অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল মানবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমন্বয় রাহা। ‘‘সরকার যদি ছাত্রভোটই বন্ধ করে দেয়, তা হলে গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবি নিয়ে আমরা পথে নামব,’’ এ দিন বলেন সমন্বয়।

Election of Students Colleges Partha Chatterjee State Government Education Minister পার্থ চট্টোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy