প্রতীকী ছবি।
কার্যনির্বাহী সভাপতি হয়েছিলেন। পূর্ণাঙ্গ সভাপতি হতে চান না তিনি? সুব্রত মুখোপাধ্যায় এক বার জবাব দিয়েছিলেন, ‘‘দরকার কী! গৌরী সেন কোথায় পাব!’’
প্রদেশ কংগ্রেসে এখন প্রায় গৌরী সেনের খোঁজে অভিযানে নামারই দশা! দলের ভাঁড়ারে মা ভবানী। প্রায় কপর্দকশূন্য অবস্থায় প্রদেশ কংগ্রেসের ভার নিয়েছেন সোমেন মিত্র। সভাপতি হিসেবে প্রদেশ কংগ্রেসের চেকবইয়ে সই করার এক্তিয়ার পেয়েছেন। কিন্তু তহবিলে টাকা কই!
দিল্লির আচমকা নির্দেশে বঙ্গ কংগ্রেসের দায়িত্ব নিয়ে সোমেনবাবু স্বীকার করছেন, ‘কাঁটার আসনে’ বসেছেন তিনি। মুখে বলছেন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা। কিন্তু কংগ্রেসের অন্দরের খবর, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ আরও বড়! নতুন সভাপতির হাতে দায়িত্বভার যাওয়ার পরে বিধান ভবনের কর্মীরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, প্রদেশ কংগ্রেসের তহবিলে সাকুল্যে যা আছে, তার মূল্য মাঝারি মানের একটা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সমান! অথচ দফতরের কর্মীদের বেতন, বিদ্যু়ৎ ও টেলিফোন-সহ যাবতীয় বিল ধরে শুধু প্রদেশ কংগ্রেসের রুটিন কাজ চালানোরই খরচ মাসে কয়েক লক্ষ টাকা! এআইসিসি-র এখনকার নীতি, সব প্রদেশ কংগ্রেসকে তহবিল জোগাড় করতে হবে স্ব-উদ্যোগে। দিল্লি আর হাত উপুড় করবে না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির রাজনৈতিক সচিব বাদল ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘তহবিলে যা থাকে, প্রদেশ সভাপতি তা-ই নিয়েই কাজ শুরু করেন। সামান্য টাকা পড়ে আছে, সঙ্গে ধার-দেনা আছে। কী ভাবে কী হবে, জানি না!’’ দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলায় ভাঁড়ারের করুণ দশার কথা তাঁর কানেও তুলে দিয়ে এসেছেন প্রদেশ নেতৃত্ব।
বস্তুত, দলীয় সূত্রের খবর, বিদায়ী সভাপতির কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রদেশ নেতাদের একাংশ ইদানীং কালে যখন দিল্লিতে দরবার করে নালিশ জানাচ্ছিলেন, তখন রাজ্যের অন্তত তিন জন নেতা-নেত্রীকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল দায়িত্ব নেওয়ার। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আসন পেতে তাঁরা কেউ আগ্রহ দেখাননি! তার মূল কারণ, নিয়মিত তহবিল জোগাড়ে অপারগতা। শেষমেশ দিল্লি বেছে নিয়েছে পোড় খাওয়া সৈনিক সোমেনবাবুকে। রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘প্রিয়দা’র (দাশমুন্সি) মতোই গোটা রাজ্যের সব জেলায় সোমেনদা’র কিছু না কিছু পরিচিতি আছে, নিজস্ব লোক আছে। সংগঠনটা চেনেন। কাকে দিয়ে কী করানো যাবে, তা-ও জানেন।’’
কার্যকালে অধীর চৌধুরী দলীয় বৈঠকে প্রায়ই বলতেন, তিনি ‘বিপিএল সভাপতি’! সদ্যপ্রাক্তন হয়েও তাঁর মন্তব্য, ‘‘চেকবইটাই আছে, টাকা তো নেই! এক একটা অনুষ্ঠানের খরচ জোগাড় করতে কালঘাম ছুটেছে!’’ তাঁর আমলের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তীর সংযোজন, ‘‘কাজ করতে গেলে বোঝা যায়, কী কঠিন!’’ তবে এ সবের জেরে কোনও তিক্ততা না রাখতে চেয়ে অধীরবাবু কর্মী-সমর্থকদের কাছে আবেদন করেছেন, ‘‘চরম প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছিলাম আপনাদের ভরসায়। পার্টির প্রতি এবং চেয়ারের প্রতি অনুগত থাকবেন।’’
আর সোমেনবাবু আবেদনের ভঙ্গিতেই বলছেন, ‘‘কংগ্রেস পরিবারের সকলে, যাঁরা নানা কারণে দূরে সরে গিয়েছেন, তাঁদের কাছেও সব রকম সহযোগিতা চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy