মদ্যপ অবস্থায় মন্দারমণিতে সমুদ্র-স্নানে নামার জন্য জোরাজুরি করায় ছয় পর্যটককে বাধা দিয়েছিল পুলিশ। আর সেই কারণে পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠল ওই পর্যটকদের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে সৈকতে ওই ঘটনার পরে পর্যটকেরা হোটেলে ফিরে গিয়ে ঘরের কাচ ও আসবাবপত্রও ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ ছ’জনকেই গ্রেফতার করেছে। সকলেই কলকাতার নিউ আলিপুরের বাসিন্দা। পাঁচ জন একই পরিবারের।
গত দু’মাসে বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে মন্দারমণি। মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। কখনও নুলিয়াদের বারণ না শুনে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সমুদ্রে নেমে মারা গিয়েছেন পর্যটক। কখনওবা সৈকতে দুই গাড়ির ‘রেস’-এ প্রাণ গিয়েছে মদ্যপ তিন তরুণের। প্রতি ক্ষেত্রেই পুলিশের বিরুদ্ধে নজরদারির অভাবের অভিযোগ উঠেছিল। এ বার হল উল্টো। নজরদারি চালাতে গিয়ে প্রহৃত হলেন এক মহিলা কনস্টেবল-সহ তিন পুলিশকর্মী।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হলেন অজয় কুণ্ডু, তাঁর ছেলে অনির্বাণ, মেয়ে বর্ষা, জামাই রাহুল এবং অনির্বাণের দুই বন্ধু মোহিত সিংহ ও সঙ্গীতা শর্মা। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই ছ’জন মদ্যপ অবস্থায় সমুদ্রে নামতে চাওয়ায় পুলিশ বাধা দিয়েছিল। কিন্তু ওঁরা পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, মারধর করেন, হোটেলে ভাঙচুর চালান। তাই গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে চারটি মোটরবাইকে মন্দারমণিতে যান অজয়বাবুরা। দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর তাঁরা হোটেলের ঘরে মদ্যপান করেন বলে অভিযোগ। তবে, সমুদ্রে নামেননি। সোমবার বিকেল গড়াতেই তাঁরা সৈকতে বসে প্রকাশ্যে মদ্যপান করছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁদের সৈকত থেকে উঠে যেতে বললেও শোনেননি। তাঁরা সমুদ্রে স্নান করতে নামেন। সেই সময় অজয়বাবুর স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে জলে পড়ে যান। স্থানীয় দোকানদার এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা তাঁদের উঠে আসতে বলেন। কিন্তু তাঁরা শোনেননি। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে যান হোটেল-কর্মীরা। তাঁরাই মণিকাদেবীকে পাঁজাকোলা করে হোটেলে নিয়ে যান। কিন্তু অজয়বাবুরা তখনও জল থেকে ওঠেননি। ফের এক মহিলা কনস্টেবল-সহ তিন পুলিশকর্মী গিয়ে অজয়বাবুদের সমুদ্রে স্নান করতে বারণ করে। তখনই ওই পুলিশকর্মীদের উপরে অজয়বাবুরা চড়াও হন বলে অভিযোগ। মার খেয়ে এলাকা ছাড়েন ওই পুলিশকর্মীরা।
অজয়বাবুরা হোটেলে ফিরে ভাঙচুর চালাতে থাকেন এবং ম্যানেজারকেও মারধর করেন বলে অভিযোগ। গোলমালের খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে অজয়বাবুদের গ্রেফতার করে। বালিসাই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় হোটেল ম্যানেজার এবং ওই মহিলা কনস্টেবলকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy