কোথাও দোকান, রেস্তরাঁ, স্টুডিও করতে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। কখনও আবার মেস, অফিসের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই সবের পর্যাপ্ত তথ্য কি রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে? একাধিক বার এই প্রশ্ন উঠেছে দমদমের তিন পুর এলাকায়।
তিন পুরসভারই একটি অংশের অভিযোগ, অনেকে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য বসত বাড়িকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সম্পত্তিকর আদায় হচ্ছে বসত বাড়ি হিসাবেই। তাতে পুরসভার রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। আবার যাঁরা ভাড়ায় বসবাস করছেন, তাঁদের সম্পর্কেও কতটা তথ্য প্রশাসনের কাছে রয়েছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
এই সংশয়ের অবশ্য ভিত্তি রয়েছে। এর আগেও দেখা গিয়েছে, প্রতারণার ঘটনায় দমদমে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলা অফিস থেকেই অভিযুক্তকে ধরেছে পুলিশ। কখনও দেখা যাচ্ছে, ভিন্দেশি নাগরিক ধরা পড়ছেন। যদিও পুলিশের তরফে বাসিন্দাদের কাছে বার বার আবেদন করে বলা হয়, বাড়ি ভাড়া দিলে ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য জানাতে হবে থানায়। পুলিশ প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, আগের তুলনায় তথ্য দেওয়ার ঘটনা বাড়লেও তা মোটেও পর্যাপ্ত নয়।
পাশাপাশি, দক্ষিণ এবং উত্তর দমদম পুরসভার বসত বাড়িগুলিকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তথ্য সংগ্রহে জোর দিতে শুরু করেছে প্রশাসন। দক্ষিণ দমদম পুরসভা জানিয়েছে, এটা ঠিক যে, বসত বাড়িকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করায় পুরসভার রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। সেই কারণে তাঁরা আপাতত রেস্তরাঁ, হোটেল, বড় দোকান বা এই ধরনের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা বাড়িগুলির ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ করছে। যদিও ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন দেখে। নাগেরবাজার থানা সূত্রের খবর, আগের তুলনায় তাঁদের কাছে সেই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। তবে দমদম থানা এলাকায় সেই চিত্র এখনও উল্টো বলেই দাবি।
দমদম পুরসভার উপ পুরপ্রধান বরুণ নট্ট জানান, তথ্য রাখার প্রয়োজন রয়েছে। পুলিশ কিংবা পুরসভা এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার চিন্তাভাবনা করছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা সৌমেন মজুমদারের কথায়, ‘‘নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য বা ভাড়া নিয়ে চলা অফিসগুলির কাজের বিষয়ে প্রশাসনের কাছে তথ্য থাকা প্রয়োজন। ভাড়া দিলে সম্পত্তিকর বেশি দেওয়ার কথা। সেই কথা ভেবেই অনেকে এই তথ্য দেওয়ায় ফাঁকি দেন। এই বিষয় পুরসভা বা পুলিশ প্রশাসন স্থানীয় ক্লাব ও নাগরিক সংগঠনগুলিকে কাজে লাগালে তথ্য দ্রুত আসবে।’’
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (আলো) পার্থ বর্মা জানান, ওই দুই পুর এলাকায় বসত বাড়ির বাণিজ্যিক ব্যবহার হলে সেই তথ্য সংগ্রহে জোর দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে তথ্য সম্পূর্ণ সংগ্রহ হলে পুরসভাগুলির রাজস্ব যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই পুলিশের কাছেও ভাড়াটে কিংবা বহিরাগতদের সম্পর্কে তথ্য থাকবে। যদিও সেই কাজে আরও বেশি তৎপরতার প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)