Advertisement
E-Paper

রাজ্যের নিয়ন্ত্রণেই বিসর্জন

এই পরিস্থিতিতে বিসর্জন সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী রায়ের ব্যাখ্যা চেয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৪

ঠিক ছিল, বিসর্জন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শুক্রবারই যাওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু এ দিন সকালে হাইকোর্টের রায় খুঁটিয়ে পড়ে মত পাল্টাল নবান্ন। রাজ্য প্রশাসনের ব্যাখ্যা, মহরমের দিন যে কেউ চাইলেই বিসর্জন দিতে পারবে, এমন রায় হাইকোর্ট দেয়নি। আদালত বলেছে, প্রশাসন অনুমতি দিলে তবেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘১ অক্টোবর, একাদশীর দিন বিসর্জনের কোনও আবেদন এলে তা বিবেচনা করবে প্রশাসন। পরিস্থিতি বুঝেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

বিজেপির অবশ্য দাবি, একাদশীর দিন কেউ প্রতিমা বিসর্জন দিতে চাইলে পুলিশ তার অনুমতি দিতে বাধ্য— এমনটাই জানিয়েছে আদালত। পুলিশ অনুমতি না দিলে তা আদালত অবমাননার সামিল হবে।

এই পরিস্থিতিতে বিসর্জন সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী রায়ের ব্যাখ্যা চেয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানান। তাঁর দাবি, বেঞ্চ জানিয়েছে, রায় নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি নেই। কেউ এর অন্য ব্যাখ্যা করলে তার দায় কোর্টের নয়।

তা হলে কী হবে একাদশীর দিন?

এ দিন নবান্নে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ‘‘কলকাতার ২৬০০ বারোয়ারি পুজো কমিটি পুজোর অনুমতি নেওয়ার সময়েই জানিয়ে দিয়েছে, তারা কেউ একাদশীর দিন বিসর্জন দেবে না।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলাগুলিতে বিসর্জনের দিন আগাম জানানোর নিয়ম নেই। তাই জেলায় কোনও পুজো কমিটি অনুমতি চাইলে ‘কেস-টু-কেস’ ভিত্তিতে তা বিবেচনা করা হবে।

আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত সাধু

হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পদক্ষেপ ঠিক করতে এ দিন নবান্নে কলকাতা ও আশপাশের জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বৈঠক ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ছিলেন ডিজি, সিপি-সহ রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা। আর ছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শুধু শাসক দলের বিধায়ক ও সাংসদরা এবং কয়েক জন মন্ত্রী। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুজো ও বিসর্জনের সময়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরির চক্রান্ত হচ্ছে। তাই প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদেরও সজাগ থাকতে হবে।

প্রশাসন ও শাসক দল সূত্রে খবর, এ দিনই পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি-নেতাদের মাধ্যমে জেলায় জেলায় এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যে, একাদশীর দিন যেন কোনও বারোয়ারি পুজোর ভাসান না হয়। তৃণমূলের এক নেতা জানান, অধিকাংশ পুজো কমিটির মাথায় রয়েছেন তাঁদের নেতা-কর্মীরা। এর বাইরে যে সব ক্লাব পুজোর আয়োজক, তাদের বেশির ভাগই ফি-বছর সরকারি অনুদান পায়। ফলে এদের কেউই মহরমের দিন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার

চেষ্টা করবে না। নবান্নের এক কর্তা জানান, এর বাইরে হাতেগোনা যে পুজোগুলি থাকবে তারা আবেদন করলে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত

নেওয়া হবে।

রায়ের উল্লেখ না করেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রী খিদিরপুরের ২৫ পল্লির পুজোর উদ্বোধনে বলেন, ‘‘যারা দুষ্টু, তারা সব কিছু ভেঙে দিয়ে যায়। যারা মিষ্টি তারা সব কিছু রক্ষা করে। আমরা দুষ্টুকে বাছব, না মিষ্টিকে বাছব।’’

কিন্তু বিজেপি এ দিনও অভিযোগ করেছে, মুখ্যমন্ত্রীর জেদের জন্যই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘উৎসবের সময়ে কেউ যাতে উস্কানি দিয়ে গোলমাল বাধাতে না পারে, কেন্দ্র ও রাজ্য সে দিকে নজর রাখবে আশা করি।’’ আর বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ চিরকালই সম্প্রীতির পীঠস্থান। সংখ্যালঘু-দরদ দেখাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীই মাঝে মাঝে বিজেপি-কে উৎসাহ দিয়েছেন। আশা করব, উৎসবের সময়ে সকলের শুভবুদ্ধি বজায় থাকবে।’’

Durga Immersion Police Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy