সারদা-কাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের আতসকাচে এ বার ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। ২০১৪-এর অগস্টে এই ক্লাবেরই এক কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নীতুকে গ্রেফতার করেছিল ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রের খবর, নীতু জেলে থাকাকালীন ক্লাবের ইমেল আইডি থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে দেওয়া হয়েছিল। কী ছিল সেই আইডিতে, কেনই বা তথ্য মুছে ফেলার দরকার পড়েছিল, তা জানতে গত বৃহস্পতিবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সচিব কল্যাণ মজুমদারকে। সে দিন তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করে সিবিআই।
কল্যাণবাবু অবশ্য তাঁকে জেরা করার বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সিবিআই আমার কাছে সারদা-কাণ্ড সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল। তার ভিত্তিতে আমি শুক্রবার গোয়েন্দাদের হাতে সে সব তুলে দিয়েছি।’’ সিবিআই সূত্রে অবশ্য খবর, কল্যাণবাবু তাদের জানিয়েছেন কাল, সোমবার তিনি ক্লাবের তথ্য সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেবেন।
গত বছরই সিবিআই জেনেছিল, সারদা সংস্থার টাকা ঘুরপথে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নানা খাতে ব্যবহার হয়েছে। সেই সূত্র ধরে তারা নীতুকে সিজিও কমপ্লেক্সে একাধিক বার ডেকে জেরা করেছিল। কী ভাবে সারদার টাকা ওই ক্লাবের তহবিলে গিয়েছিল এবং তা কোন কোন খাতে খরচ করা হয়েছিল, নীতুর কাছে সেটাই জানতে চেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু প্রশ্নের জবাবে ওই ক্লাবকর্তা যে সব তথ্য দিয়েছিলেন, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তদন্তকারীরা। সেই কারণে নীতুর বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেখান থেকে কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করে তারা। সে সব খতিয়ে দেখেই সিবিআই নীতুকে গ্রেফতার করে। আর তারপরেই ক্লাবের বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যকাউন্ট সিলও করে দেওয়া হয়। নীতুর বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছে সিবিআই। ওই ক্লাবকর্তা এখন জামিনে রয়েছেন।
তদন্তে সিবিআই আরও জেনেছে, নীতু যখন জেলে ছিলেন তখন ক্লাবের একাধিক ইমেল আইডি থেকে বেশ কিছু তথ্য মুছে ফেলা হয়েছিল। ক্লাবের আর্থিক লেনদেনের সময়ে ওই আইডিগুলি ব্যবহার করা হতো বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর। সিবিআইয়ের প্রাথমিক ধারণা, অসৎ উদ্দেশ্যেই ওই আইডিগুলি মুছে ফেলা হয়েছে এবং ক্লাবেরই লোকজন এর সঙ্গে যুক্ত। কারা আইডি মুছেছে, কারা ওই কাজ করতে বলেছিল, সে সব জানতেই কল্যাণবাবুকে ডেকে পাঠানো হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর।