গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু’। তড়িঘড়ি এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করাতে হয়েছিল তাঁকে। মঙ্গলবার রাতে অবশেষে তাঁকে সেখান থেকে বার করে আনা হল। বুধবার তিনি মোটামুটি সুস্থ এবং নিজের কেবিনেই রয়েছেন বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর। কিন্তু এই ‘সুস্থতা’ আশ্বস্ত করতে পারছে না ইডিকে।
সুস্থতার থেকে বরং ‘কালীঘাটের কাকু’র বার বার অসুস্থ হয়ে পড়াই ভাবাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটিকে। এসএসকেএম হাসপাতাল তাঁর চিকিৎসা নিয়ে এ বার নতুন করে চিন্তা করতে শুরু করেছে ইডি। এমনকি, প্রয়োজনে ‘কালীঘাটের কাকু’কে এসএসকেএম থেকে বার করে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় কি না তা-ও ভেবে দেখছে তারা। ইডি সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শও নিতে শুরু করেছেন ইডির অফিসাররা। কারণ, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষেই একমাত্র সুজয়কে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র দীর্ঘ দিন ধরেই ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। নিয়োগ মামলার তদন্তে তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু আজ পর্যন্ত ইডি ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে উঠতে পারেনি। যত বারই তাঁরা সুজয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসএসকেএম হাসপাতালে গেছে, তত বারই কোনও না কোনও কারণে পিছিয়ে যায় নমুনা সংগ্রহের কাজ। কখনও সুজয় অসুস্থ হয়ে পড়েন, কখনও বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়তে হয় ইডিকে। ইডি সূত্রে খবর, সুজয়ের এই বার বার অসুস্থ হয়ে পড়া নিয়েই বেশি চিন্তিত ইডি। কারণ তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহের কাজটি ক্রমাগত পিছিয়ে চলেছে এই একটিই কারণে। যার জন্য থমকে গিয়েছে তাঁদের তদন্তও।
যেমন শুক্রবারই সুজয়ের স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে এসএসকেএম থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল ইডি। তৈরি ছিল মেডিক্যাল বোর্ড। শুক্রবার সকালে এসএসকেএমে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকেরাও। পৌঁছয় একটি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু সুজয়কৃষ্ণকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়নি।
এসএসকেএম সূত্রে জানানো হয়, শারীরিক পরিস্থিতির ‘অবনতি’ হওয়ায় সুজয়কে আইসিসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে। বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাঁকে কেবিন থেকে সরিয়ে হৃদ্রোগ বিভাগের আইসিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে সুজয়কে ইএসআই নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বার বার এই একই ঘটনায় কিছুটা হলেও চিন্তায় ইডি। তারা চিন্তিত এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও।
ইডি অবশ্য অতীতেও এসএসকেএমে সুজয়ের চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। গত নভেম্বরে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গেলে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছে বাধা পেয়েছিলেন ইডির গোয়েন্দারা। তাঁদের বলা হয়েছিল, মানসিক চাপে থাকার জন্য সুজয় কণ্ঠস্বরের নমুনা দিতে পারবেন না। যুক্তি শুনে ইডি তখন বলেছিল, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহ না করার জন্য যে যুক্তিগুলি দিচ্ছেন, তা ভিত্তিহীন। এমনকি, যে মেডিক্যাল বোর্ড ‘কালীঘাটের কাকু’কে দেখছে, তার নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে আদালতের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ইডি।
এ বার তাই তারা গুরুত্ব সহকারেই ভেবে দেখছে সুজয়কে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বার করে আনা যায় কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy