গত এপ্রিলেই ভবানীপুরের নিজ়াম প্যালেস এবং সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা ও স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ-সহ সিবিআইয়ের একাধিক দফতর নিউ টাউনে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (এনবিসিসি)-এর বহুতলে সরে গিয়েছে। ওই বাড়ির ৯-১২ তলায় সিবিআইয়ের বিভিন্ন বিভাগের দফতর অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে লকআপের সংখ্যাও। এ বার একই পথে হাঁটতে চলেছে আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিও।
তবে বছর কয়েক আগে ওই ভবনের ১৫ তলায় অফিস চালু করেছে আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। বছর চারেক আগেই সল্টলেকের অফিস থেকে ওই ভবনে তারা সরে এসেছিল।
সূত্রের খবর, আগামী জানুয়ারির মধ্যে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে ইডির কলকাতার জ়োন-১ এবং জ়োন-২ দফতরও ওই বহুতল আবাসনেই স্থানান্তরিত হতে চলেছে। ইডির দু’টি দফতরের নতুন অফিস বহুতলটির এক এবং দোতলায় বসতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
ইডির এক কর্তার কথায়, “সিজিও কমপ্লেক্সে দু’টি তলায় অফিস ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু মামলার চাপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। কলকাতায় ইডি একশোরও বেশি মামলার তদন্ত করছে। গত চার বছরে গুচ্ছ গুচ্ছ ‘হাই প্রোফাইল’ মামলার তদন্তের ভার নিতে হয়েছে। অফিসারের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। সিজিও কমপ্লেক্সের জায়গায় আর কুলোচ্ছে না।” নিউ টাউনের নতুন অফিস তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইডির কর্তারা।
ইডির কর্তাদের কথায়, সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে লকআপ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। মাত্র দু’টি লকআপ রয়েছে সিজিও কমপ্লেক্সে। ৬-৭ জনের বেশি বন্দি এক সঙ্গে লকআপে রাখা যায় না। নতুন ভবনে পাঁচটি লকআপ তৈরি করা হচ্ছে। ১৫-২০ জন বন্দিকে অনায়াসে তাতে রাখা যাবে।
ইডি সূত্রে দাবি, তাদের মামলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিযুক্তের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। অদূর ভবিষ্যতে আরও ‘হাই প্রোফাইল’ মামলা হতে পারে এবং প্রভাবশালী মান্যগণ্যেরা গ্রেফতার হতে পারেন বলেও দিল্লি থেকে বার্তা এসেছে। সেই কারণেই অতি দ্রুত নিউ টাউনের বহুতল আবাসনে অফিস স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ইডির এক কর্তা বলেন, “লক আপের পাশাপাশি অনেক বড় জায়গা নিয়ে অফিস তৈরি করা হচ্ছে। ১৫০-২০০ জন অফিসার একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন। দরকারে রাতে অফিসে থাকার ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে।”
নিজা়ম প্যালেস এবং সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই, ইডির পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দফতর ছিল। তাতে নিরাপত্তা নিয়ে অনেক সমস্যা হত বলে ইডি কর্তাদের কারও কারও দাবি। তা ছাড়া, নানা সময়ে রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিং-বিক্ষোভে সমস্যা হচ্ছিল বলেও খবর। কিন্তু এ বার একটি বহুতল আবাসনে এক ছাতার তলায় সমস্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিস করা হচ্ছে। ইডির জনৈক অফিসার বলেন, “ওই অফিসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার। চার দিকে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। কয়েক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা এবং সুরক্ষা বলয়ও তৈরি হচ্ছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)