Advertisement
E-Paper

মুকুল রায়কে অ্যালকেমিস্ট মামলায় ডেকে পাঠাল ইডি, দিল্লিতে তলব নিয়ে কী বললেন পুত্র শুভ্রাংশু?

মুকুল রায়কে তলব করল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, অ্যালকেমিস্ট মামলায় বিধায়ককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় প্রায় ১৯০০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ওঠে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৭
মুকুল রায়কে তলব করল ইডি।

মুকুল রায়কে তলব করল ইডি। —ফাইল চিত্র।

মুকুল রায়কে তলব করল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্থলগ্নি সংস্থা অ্যালকেমিস্ট মামলায় কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় প্রায় ১৯০০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। শুক্রবার দিল্লিতে ইডির দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। তবে এই সপ্তাহের শুক্রবার না কি আগামী সপ্তাহের, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ইডির তলব নিয়ে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায় বলেন, ‘‘বাবার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তিনি কিছুই মনে রাখতে পারেন না। তাঁর পক্ষে দিল্লিতে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে ইডি আধিকারিকেরা যদি বাড়ি এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান, তা হলে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে।’’

অ্যালকেমিস্ট মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কেডি সিংহ। ইডি সূত্রে খবর, তাঁরই সংস্থা ছিল ‘অ্যালকেমিস্ট ইনফ্রা রিয়ালটি’। সেই সংস্থার বিরুদ্ধে লগ্নিকারীদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তোলার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ইডি ২০১৬ সালে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, সেবি-র অনুমতি ছাড়াই ওই সংস্থাটি লগ্নিকারীদের থেকে ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা তুলেছে। তদন্তে নেমে ২০১৯ সালে কেডি-র কুফরির রিসর্ট, চণ্ডীগড়ের শো-রুম, হরিয়ানার পঞ্চকুলার সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ ২৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি।

সেই ঘটনার ১৫-১৬ মাস পর ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কেডিকে গ্রেফতার করে ইডি। সেই সময় বিজেপিতে ছিলেন মুকুল। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে এসে কেডি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন, মুকুল বা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মতো বিজেপি নেতারা তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে কী বলছেন? তত দিনে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ভোটের আগে কেডির গ্রেফতারি নিয়ে যখন বিজেপি শাসকদলকে লাগাতার বিঁধে চলছিল, সেই সময় তৃণমূলের তরফেও পাল্টা দাবি করা হয়েছিল যে, শুভেন্দু-মুকুলের কাছে ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা এবং অ্যালকেমিস্টের সমস্ত খবর রয়েছে। গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সিবিআইকে চিঠি দিয়েও জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সেই মুকুলকে এ বার অ্যালকেমিস্ট মামলায় ডেকে পাঠাল ইডি। কিন্তু শরীরের যা অবস্থা, তাতে তাঁর পক্ষে দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয় বলেই পরিবার সূত্রে খবর।

মুকুল যে অসুস্থ, তা অনেক দিন ধরেই প্রকাশ্যে বলে এসেছেন শুভ্রাংশু। পরিবার সূত্রেই জানা গিয়েছিল, মুকুল স্নায়ুজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এ জন্য গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। মুকুলের মাথায় জল জমেছিল বলে সেই সময় জানা গিয়েছিল হাসপাতাল সূত্রে। তার পর থেকেই পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, মুকুল ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। কিছুই মনে রাখতে পারছেন না। তেমন ভাবে হাঁটচলাও করতে পারেন না ইদানীং।

এক সময় তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ ছিলেন মুকুল। রাজ্য রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ‘বিশ্বস্ত সৈনিক’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। পরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম প্রতীকে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ভোটে লড়েন মুকুল। জয়ীও হন। ভোটের ফল ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শাসকদলে প্রত্যাবর্তন ঘটে মুকুলের। যা ঘিরে সরগরম হয় রাজনীতির অলিন্দ। এর পর মুকুলের বিধায়ক পদ বাতিল নিয়ে সরব হয় বিজেপি। যা নিয়ে টানাপড়েন চলে। এই সময়েই সক্রিয় রাজনীতি থেকে ‘উধাও’ হয়ে যান মুকুল।

গত বছর এপ্রিল মাসে আচমকাই দিল্লি পৌঁছে গিয়েছিলেন বিধায়ক। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। সেই সময় শুভ্রাংশু দাবি করেছিলেন, তাঁর বাবা মানসিক ভাবে সুস্থ নন। মুকুলও দিল্লিতে বসে দাবি করেছিলেন, বাড়ির লোক তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন।

Mukul Roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy