শিক্ষামন্ত্রী নয়, ব্রাত্য বসু তৃণমূলের সহ-সভাপতি হিসাবে হাজির ছিলেন অভিষেক-আন্দোলনকারী বৈঠকে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে আন্দোলনকারীদের বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে নয়, বরং তৃণমূলের সহ-সভাপতি হিসাবেই হাজির ছিলেন ব্রাত্য বসু। সোমবার বিকাশ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
ক্যামাক স্ট্রিটে শুক্রবার এসএসসি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এএসসির মেধাতালিকায় নাম থাকা সকলকে চাকরির আশ্বাস দেওয়া হয়। আর তাতেই প্রশ্ন ওঠে সাংসদ অভিষেক সরকারের প্রতিনিধি না হয়ে কী ভাবে চাকরির আশ্বাস দিলেন! তৃণমূলের তরফে বলা হচ্ছিল, অভিষেকের সঙ্গেই ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি তো সরকারের প্রতিনিধি। এর পরেও বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, রাজনৈতিক দফতরে শিক্ষামন্ত্রী কী ভাবে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বা তৃণমূলের পক্ষে সে উত্তর দেওয়া হয়নি। সোমবার ব্রাত্য জানালেন, সে দিন শিক্ষামন্ত্রী নয়, তিনি তৃণমূলের সহ-সভাপতি হিসাবে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন।
শুক্রবারের ওই বৈঠকের পরে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি শহিদুল্লাহ্ বলেন, ‘‘স্যর (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) এবং শিক্ষামন্ত্রী (ব্রাত্য বসু) আমাদের সমস্যার প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। তাঁরা আমাদের সাহায্য করার ১০০ শতাংশ চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমরা খুশি।’’ তখন অভিষেকের অধিকার নিয়ে বিরোধী বিজেপি এবং সিপিএম প্রশ্ন তুললেও শাসক তৃণমূল জানায় এর মধ্যে ‘অন্যায় বা অস্বাভাবিক’ কিছু নেই। দলের বক্তব্য ছিল, রাজ্যের শাসকদলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এমন বৈঠক করতেই পারেন। এর পরে ব্রাত্যের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, অভিষেকের দফতর, যা আদতে দলীয় দফতর, সেখানে বসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যই বা কী করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করলেন? শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ব্রাত্যের ওই বৈঠক করার কথা তাঁর সরকারি দফতরে।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘সরকার এবং দলের মধ্যে যে একটা পার্থক্য রয়েছে, সেটাই তৃণমূল মানে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও তা মানেন না। তাঁর দলও নয়। শিক্ষামন্ত্রীও দলীয় দফতরে বসে চাকরির আশ্বাস দিতে পারেন না।’’ প্রায় একই সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও বলেন, ‘‘অসংবিধানিক বিষয়কে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়াই তৃণমূলের কাজ! অতীতেও এমন কাজ হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনা দলীয় দফতরে হয়েছিল বলেই তো এত বড় দুর্নীতি হয়েছে। বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরেও চাকরি বিলি হয়েছে। সেই রীতিই বহন করছেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী।’’ সোমবার সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বিকাশ ভবনের সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য তাঁর রাজনৈতিক সত্তা স্মরণ করিয়ে দিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy