E-Paper

বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিখোঁজ প্রৌঢ়, অন্ধকারে পরিবার

দমদম নাগেরবাজারের বাসিন্দা ভিক্টর দত্ত (৬৫) বছর চারেক ধরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন। তাঁর ভাই অভিজিৎ জানাচ্ছেন, বৃদ্ধাশ্রমটি প্রথমে মধ্যমগ্রামে ছিল।

ভিক্টর দত্ত।

ভিক্টর দত্ত। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ০৯:৩৫
Share
Save

বৃদ্ধাশ্রমে থাকা দাদার সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে বার বার ফোন করেছিলেন ভাই। অভিযোগ, কোনও ভাবেই যোগাযোগ করতে দিচ্ছিলেন না বৃদ্ধাশ্রমের কর্মীরা। উল্টে রাতে জোর করায়, অন্য এক জনকে দাদা সাজিয়ে ফোন ধরানো হয়। অপর প্রান্তে থাকা ভাইয়ের সেই গলার স্বরে সন্দেহ হতেই তিনি সোজা চলে যান থানায়। আচমকাই ঠিকানা বদল করা বৃদ্ধাশ্রম খুঁজে বার করে ভাই সেখানে গিয়ে দেখেন, দাদা নেই! এমনকি, সেই নিখোঁজের বিষয়ে কোনও খবরই তাঁদের জানানো হয়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ে রহড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে নিখোঁজ প্রৌঢ়ের পরিবার।

দমদম নাগেরবাজারের বাসিন্দা ভিক্টর দত্ত (৬৫) বছর চারেক ধরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন। তাঁর ভাই অভিজিৎ জানাচ্ছেন, বৃদ্ধাশ্রমটি প্রথমে মধ্যমগ্রামে ছিল। ভিক্টর সেখানে যাওয়ার দু’বছরের মধ্যে ঠিকানা বদল করে সেটি বাদু এলাকায় উঠে আসে। সেখানেই ভিক্টর রয়েছেন বলে জানতেন পরিজনেরা। অভিজিতের অভিযোগ, ৫ জুন তিনি ফোন করলে প্রথম জানতে পারেন, এক মাস আগে ফের ঠিকানা বদল হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমের। সেটি চলে এসেছে রহড়ার রুইয়া এলাকায়। অভিজিৎ বলেন, ‘‘ঠিকানা বদল হলেও কেন তা জানানো হয়নি, জানতে চাইলেও সদুত্তর মেলেনি। এর পরেই আমি দাদার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’’ অভিযোগ, তাতে জানানো হয়, জায়গা বদল হওয়ায় আসবাবপত্র সরানোর কাজ চলছে, তাই সকলে খুব ব্যস্ত। কোনও আবাসিকের সঙ্গে কথা বলানো সম্ভব নয়।

অভিজিৎ জানাচ্ছেন, ৫ তারিখ সন্ধ্যায় তিনি ফের ফোন করে ভিডিয়ো কলে ভিক্টরকে দেখতে চান বলে দাবি করেন। কিন্তু তাতেও জানানো হয়, ফোনে ইন্টারনেট-রিচার্জ করা নেই, তাই সেটাও সম্ভব নয়। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘রাতে ফের ফোন করলে, ওরা অন্য এক জনকে আমার দাদা সাজিয়ে ফোন ধরায়। কিন্তু গলা শুনেই আমার সন্দেহ হয়। তখন আমি রহড়া থানায় গিয়ে পুরো বিষয়টা জানাই।’’ পাশাপাশি, রাতেই ওই বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে অনেক ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেননি বলেও অভিযোগ ভিক্টরের পরিবারের। ৬ জুন ভোরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান অভিজিতেরা। গিয়ে অন্য এক আবাসিকের থেকে জানতে পারেন, দিন কুড়ি আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ভিক্টর! যদিও বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, দিন তিন-চারেক আগে থেকে ওই প্রৌঢ়ের খোঁজ নেই।

অভিজিৎ বলেন, ‘‘প্রতি মাসের মতো ৪ জুনও দাদার থাকা-খাওয়া বাবদ সাত হাজার টাকা পাঠিয়েছি। তার প্রমাণও রয়েছে। কিন্তু দাদা দিন কুড়ি আগে নিখোঁজ হয়ে থাকলেও সেটা জানানো হল না কেন? টাকা নেওয়ার সময়েও তো জানানো উচিত ছিল।’’ এক জন আবাসিক নিখোঁজ হওয়া সত্ত্বেও কেন বৃদ্ধাশ্রমের তরফে থানায় কোনও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ভিক্টরের পরিজনেরা।

নিখোঁজ ডায়েরি না করা, পরিবারকে না জানানোর অভিযোগের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বৃদ্ধাশ্রমের মালিক উজ্জ্বল সরকার। তিনি শুধু বলেন, ‘‘আগেও কয়েক বার ওই আবাসিক বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কখনও আমরা খুঁজে এনেছি, কখনও উনি নিজে চলে এসেছেন। এ বার কী ভাবে নিখোঁজ হলেন বুঝতে পারছি না। বহু বার পরিবারকে বলেছিলাম ওঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Missing old age home

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।