Advertisement
E-Paper

মমতার আগ্রহ, তবু থমকে ইংরেজি শেখার প্রকল্প

গত এপ্রিলে বিশ্ব বাংলা শীর্ষ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই প্রকল্পটির কথা বলেন। কিন্তু তার ছ'মাস পরেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের টুঁ শব্দটি নেই।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪১
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

খোদ মুখ্যমন্ত্রী ছাড়পত্র দিয়েছেন কবেই! মাদ্রাসার কর্তাব্যক্তি থেকে শিক্ষক বা শিক্ষার্থীমহলেও পড়ুয়াদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন ছড়িয়ে পড়েছিল। মাদ্রাসার পড়ুয়াদেরজন্য নানা ক্ষেত্রের কর্মসংস্থানের দরজা খুলে দিতে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় ব্যবহারিক ইংরেজি শিক্ষার একটি প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা তবু মাস, বছর পার করেও বিশ বাঁও জলে। অথচ অনেকেরই আশা, সরকারি মাদ্রাসার উঁচু ক্লাসের পড়ুয়া, শিক্ষকদের মধ্যে প্রকল্পটি চালু হলে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ একটু ফিরতে পারত।

এ রাজ্যে নানা স্তরের শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী থেকে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরেই দরকারমাফিক ব্যবহারিক ইংরেজিতে সফল ভাবে তালিম দিয়ে আসছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। কলকাতা পুলিশ, রাজ্য পুলিশ-সহ রাজ্য সরকারের চার-পাঁচটি বিভাগে কম-বেশি ৪৫০০ জন কর্মচারীকে কাজের ক্ষেত্রে ইংরেজি ব্যবহারের (মূলত লেখা) খুঁটিনাটি শেখানো হয়। আবার রাজ্যের হজ কমিটির উদ্যোগেও ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ইংরেজি শেখানো হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, এর পরেই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে গাঁটছড়ায় সরকারি মাদ্রাসার পড়ুয়া, শিক্ষকদের তাঁদের দরকারমাফিক ইংরেজি শেখানোর কথা ভাবা হয়। ২০১৯ সালেই প্রকল্পটির জন্য কী কী করণীয় তার রূপরেখা (নিডস অ্যাসেসমেন্ট) ঠিক করে ফেলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তবু প্রকল্পটির রূপায়ণের চাকা গড়ায়নি।

গত এপ্রিলে বিশ্ব বাংলা শীর্ষ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই প্রকল্পটির কথা বলেন। কিন্তু তার ছ'মাস পরেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের টুঁ শব্দটি নেই। আগে সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরটি নিজের হাতে রেখেছিলেন মমতা। এখনকার মন্ত্রী গোলাম রব্বানিকে রবিবার ফোন করেও সদুত্তর মেলেনি। গোয়ালপোখরে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ফোনে রব্বানি বলেন, “কলকাতায় ফিরে প্রকল্পটির অবস্থা খতিয়ে দেখব।” সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তার ব্যাখ্যা, “২০১৯ থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে কথা চলছে। লকডাউন পর্বে সবই থমকে ছিল। আশা করছি, এ বার চালু হবে।”

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের আওতায় ৬১৭টি মাদ্রাসার নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এই তালিম দেওয়া হবে। মূলত অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষা চলবে। এ ছাড়া, ৬১২ জন শিক্ষককেও এই তালিম দেওয়া হবে। এর ফলে, প্রকল্পটির একটি দীর্ঘমেয়াদী সুফল বজায় থাকবে। সরকারি কর্তাদের আশা, ব্যবহারিক ইংরেজির এই তালিম মাদ্রাসার পডুয়াদের জন্য হোটেল, রেস্তরাঁ, হাসপাতাল, খুচরো বিপণি থেকে কলসেন্টারের মতো চাকরির দরজা খুলে দেবে।

উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির রাহাতপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সাহিদুর রহমান বলছিলেন, “রাজ্যের বেশিরভাগ মাদ্রাসাতেই এখন স্কুলছুটের ছড়াছড়ি। ছাত্রীদের অসময়ে বিয়ে হয়ে গেলেও মেয়েরা তাও স্কুলের পড়া শেষ করছে। ছেলেরা লকডাউন পর্বের পরে আরও বেশি করে ভিন রাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছে। ব্যবহারিক ইংরেজি শিক্ষার মতো কর্মমুখী শিক্ষার সুযোগ পেলে হয়তো পড়ুয়ারা পড়াশোনায় বেশি আগ্রহ পেত।“

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার দেবকুণ্ডা শেখ আব্দুর রেজ্জাক মেমোরিয়াল গার্লস হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুনও হতাশ প্রকল্পটি থমকে থাকায়। তিনি বলছেন, “শিক্ষক নিয়োগ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অস্বাভাবিক দেরি হচ্ছে।” তবু দ্রত প্রকল্পটি চালু করা যাবে বলে আশায় ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ।

Mamata Banerjee madrasah English
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy