রাজ্যে প্রতি বছরই বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার চরিত্র। কালবৈশাখী প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। বর্ষার সময় বদলে যাচ্ছে। কৃষকেরা ভুগছেন। আবহাওয়ার চরিত্র বদলে যাওয়ায় নতুন নতুন রোগ দেখা যাচ্ছে। জীবাণুরা অতি সক্রিয় হয়ে উঠছে যখন-তখন। খামখেয়ালি আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ বার তাদের স্কুলস্তরের পাঠ্যক্রমকে ঢেলে সাজতে চলেছে রাজ্যের স্কুল পাঠ্যক্রম কমিটি।
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই পরিবর্তিত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। বিকাশ ভবন সূত্রে বলা হয়, বর্তমানে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে পাঠ্যবই দেওয়া হয়। সেখানে প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গেই পরিবেশকে জড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। ভূগোল, ইতিহাস ও বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিবেশ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। নবম-দশমে জীবনবিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান ও ভূগোলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে পরিবেশকে। রাজ্যের স্কুল পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা ওই সব বিষয়ের পাঠ্যসূচিকে যুগোপযোগী করতে চাইছি।’’
কমিটির এক সদস্য জানান, আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি যে ভাবে বদলাচ্ছে, তাতে প্রতি বছরই পরিবেশ সংক্রান্ত পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ওই সদস্য বলেন, এখন পশ্চিমবঙ্গের জেলা বেড়েছে। তাই ভেঙে যাওয়া জেলাগুলিতে কোন ফসল কখন হয়, সেচের কাজ কী ভাবে হয়, কত বৃষ্টি হয়, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কত ওঠে, কোন কোন রোগের সংক্রমণ ঘটে— সব তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
সবুজায়ন দ্রুত কমার ফলে যে বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে এবং আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, সে ব্যাপারে পড়ুয়াদের আরও সম়ৃদ্ধ করতে চাইছে স্কুল শিক্ষা দফতর। ‘‘পড়ুয়াদের এই সব সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করা এবং সমস্যার সমাধানের পথ বলে দেওয়া আমাদের কর্তব্য। সেই কাজই চলছে,’’ বলেন অভীকবাবু।
ইতিমধ্যেই স্কুল শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে স্কুলের চারপাশ সবুজে ঘেরার কাজ শুরু হয়েছে। পরিবেশের সঙ্গে পড়ুয়াদের নিবিড় সম্পর্ক গড়তে মাঠ-ঘাটে গিয়ে পড়ুয়াদের পাঠ দেওয়ার পদক্ষেপও শুরু হয়েছে।