Advertisement
১৬ মে ২০২৪
West Bengal News

সোনার বাটে বিদেশের মার্কা মুছে ডলারে লেনদেন, নজর ফাঁকি দিতে নয়া ফন্দি বাংলাদেশি পাচারকারীদের!

কাস্টমসের এক কর্তা ইঙ্গিত দেন, কলকাতায় একটি শক্তিশালী চক্র রয়েছে যারা ওই বেআইনি সোনা কিনে কলকাতার বাজারে সরবরাহ করে।

এ ভাবেই প্রস্তুতকারীর নাম ও ট্রেডমার্ক গলিয়ে দিচ্ছে পাচারকারীরা। —নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই প্রস্তুতকারীর নাম ও ট্রেডমার্ক গলিয়ে দিচ্ছে পাচারকারীরা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:১৩
Share: Save:

গোয়েন্দাদের ধোঁকা দিতে এ বার সোনার বাটে খোদাই করা প্রস্তুতকারীর নাম গলিয়ে দেওয়া শুরু করেছে পাচারকারীরা। শুধু তাই নয়, সোনার দাম ভারতীয় টাকায় না নিয়ে, মার্কিন ডলারে লেনদেন শুরু করেছে তারা। বুধবার বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে বনগাঁ হয়ে আসা সোনার বাট পাকড়াও করে এমন তথ্য জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।

কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতর কাস্টমসের (পিএনআই) শাখার গোয়েন্দারা বুধবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বনগাঁর বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এক গ্রামের বাসিন্দাকে পাকড়াও করে। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৬টি সোনার বাট। গড়ে এক একটির ওজন প্রায় ১০০ গ্রাম। এক কাস্টমস কর্তা বলেন, ‘‘বাজেয়াপ্ত সোনার বারে দেখি ওপরে খোদাই করা মার্কা নেই। সাধারণত যেখানে ওই বার তৈরি হয় তার কোনও চিহ্ন বা নাম খোদাই করা থাকে বারের উপরে।” ধৃতকে জেরা করে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে সোনা এ দেশে ঢোকার পরেই পাচারকারীরা বনগাঁয় ওই মার্কা তুলে দিচ্ছে, যাতে সহজে ধরা না যায় যে ওই সোনা বিদেশ থেকে পাচার করা বেআইনি সোনা।

কাস্টমসের গোয়েন্দাদের আর একটি দল ধৃতকে জেরা করে বনগাঁ থেকে পাকড়াও করে বরুণ মিস্ত্রি নামে এক ব্যক্তিকে। গোয়েন্দাদের দাবি, বাংলাদেশ থেকে সোনা আসে বরুণের কাছে। এর পর বরুণ মাস মাইনে করা সোনাবাহক বা কেরিয়ার দিয়ে সেই সোনা পাঠায় কলকাতায় একটি দলের কাছে। কলকাতার দলটি এর পর বিভিন্ন গয়না প্রস্তুতকারীকে ওই সোনা বিক্রি করে। গোয়েন্দাদের হিসেব মতো, ওই বেআইনি সোনা কিনলে আইনি পথে কেনা সোনার থেকে প্রতি কিলোগ্রামে ৫ লাখ টাকা কম পান গয়না প্রস্তুতকারীরা। ফলে অনেকেই ওই বেআইনি সোনা কিনতে ঝোঁকেন।

বরুণকে পাকড়াও করেই জানা যায়, বনগাঁয় কী ভাবে সোনা পাচারকারীরা সোনার মার্কা তুলে দিচ্ছে। জানা যায়, সোনার দামও তারা ডলারে নিচ্ছে। নিউ মার্কেট এলাকার কয়েক জন বিদেশি মুদ্রার ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ওই ডলার পৌঁছে যায় সোনা বিক্রেতার কাছে। বাজেয়াপ্ত ৬টি সোনার বাটের দাম মেটানোর জন্য রাখা এমন ৪০ হাজার মার্কিন ডলার গোয়েন্দারা বুধবার উদ্ধার করেন সদর স্ট্রিটের এক বিদেশি মুদ্রা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে।

কাস্টমসের এক কর্তা বলেন, মূলত সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি টাঁকশালে তৈরি সোনার বাট চোরাপথে চলে আসে বাংলাদেশ বা ভুটানে। সেখান থেকে ঢোকে ভারতে। তিনি ইঙ্গিত দেন, কলকাতায় একটি শক্তিশালী চক্র রয়েছে যারা ওই বেআইনি সোনা কিনে কলকাতার বাজারে সরবরাহ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gold Smuggling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE