হরিণশিঙা গ্রামে শুরু হয়েছে সমীক্ষার জন্য খনন। ছবি: পাপাই বাগদি
তিন গ্রামে আগেই খনন কাজ শুরু হয়েছিল। বীরভূম জেলা প্রশাসনের চিন্তা ছিল চতুর্থ গ্রামটিকে নিয়ে। কারণ, খনি বিরোধী আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা ‘বীরভূম জমি জীবন জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা’র প্রভাব এই গ্রামে খুব বেশি। তবে প্রশাসনকে স্বস্তি দিয়ে মহম্মদবাজার ব্লকের প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকা ডেউচার সেই হরিণশিঙা গ্রামে মঙ্গলবার কোনও বাধা ছাড়াই ‘বোর হোল’ বা খননের কাজ করল সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট লিমিটেড (সিএমপিডিআইএল)।
মাটির কত নীচে কোথায় কত কয়লা কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানতে ডেউচা-পাঁচামিতে তথ্যভিত্তিক সমীক্ষার প্রয়োজন। সেই কাজ শুরু হয়েছিল ১৪ জুলাই, হিংলো পঞ্চায়েতের কেন্দ্রপাহাড়ি গ্রাম থেকে। পরে দেওয়ানগঞ্জ এবং পাথরচাল গ্রামেও খনন হয়। তবে মহাসভার ‘খাসতালুক’ হরিণশিঙা গ্রামে কী হবে, এই নিয়ে চিন্তা ছিলই প্রশাসনে। দিন কয়েক আগে জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে মহাসভা জানিয়েও দেয়, অন্য গ্রামে বোরিং চললেও কোথাও যদি এলাকার বাসিন্দা আপত্তি জানান, সেখানে বোরিং করা যাবে না।
তার পরেও এ দিন খননের কাজে বাধা আসেনি। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, ‘আলোচনায়’ কাজ হয়েছে। মহাসভার দুই অন্যতম প্রভাবশালী নেতা জোসেফ মারান্ডি এবং মুন্সি হেমব্রম জানিয়ে দেন, এলাকাবাসীর স্বার্থেই সমীক্ষার কাজে তাঁরা বাধা দেবেন না। তার পরই যন্ত্র দিয়ে ‘বোর হোল’ করার কাজ শুরু হয়েছে হরিণশিঙা গ্রাম লাগায়ো জঙ্গলে। বিকেল পর্যন্ত ৮০ ফুট খনন করা গিয়েছে। গ্রামে মোট চারটি ‘পয়েন্টে’ খনন হবে। ইতিমধ্যেই ডেউচায় মাটির ১৬০ গভীরে কয়লার স্তর মিলেছে। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের ইচ্ছেতেই সমীক্ষার কাজ চলছে। কেউ কেউ হয়তো অন্য রকম মনোভাব পোষণ করছেন। সেটা আলোচনায় মিটিয়ে নেওয়া যাবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, ইচ্ছুক জমিদাতাদের সরকার ঘোষিত ক্ষতিপূরণের চেক, ভূমিহীনদের পাট্টা এবং এক লপ্তে ২৬০ জনকে জুনিয়র কনস্টেবলের চাকরি দেওয়ার পরে এলাকায় ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। প্রচুর মানুষ জমি দিতে ইচ্ছুক। মহাসভাকেও ক্রমাগত বোঝানো হয়েছে, সমীক্ষা আর খনি গড়া দু’টো এক বিষয় নয়। তার পরেই জোসেফরা অবস্থান বদল করেন বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি। কাজে বাধা না-দেওয়া নিয়ে সোমবার তাঁরা লিখিত বিবৃতি দেন। হরিণশিঙা এলাকা সূত্রের খবর, বেশ কিছু মহিলা এখনও খনি সংক্রান্ত যে কোনও কার্যকলাপের ঘোর বিরোধী। প্রশাসন তাঁদেরও বোঝাতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy