Advertisement
E-Paper

কড়া নিরাপত্তায় ছানি কাটা হল আফতাবের

উত্তর কলকাতার এক থানার অফিসার মঙ্গলবার রাতে লালবাজার থেকে ‘স্পেশ্যাল ডিউটি’-র মেসেজ পেলেন। বুধবার ভোরে পৌঁছতে হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০২

উত্তর কলকাতার এক থানার অফিসার মঙ্গলবার রাতে লালবাজার থেকে ‘স্পেশ্যাল ডিউটি’-র মেসেজ পেলেন। বুধবার ভোরে পৌঁছতে হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ দিন পৌঁছে তিনি দেখলেন, প্রচুর অফিসার হাজির। এক ডিসি সবাইকে নির্দেশ দিলেন, কেউ যেন মোবাইল ব্যবহার না করেন।

এত গোপনীয়তার কারণ? এক হাই প্রোফাইল বন্দির বাঁ চোখের ছানি অপারেশন। বন্দির নাম আফতাব আনসারি। কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারের সামনে জঙ্গি হামলা ও খাদিমকর্তা অপহরণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে এ দিন সকাল ৭টায় আফতাবকে হাসপাতালে আনা হয়। পৌনে ৯টায় তাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় পুলিশ। চিকিৎসক অসীম চক্রবর্তী অস্ত্রোপচার করেন। আফতাবকে আনা হয় কালো প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে। যার সামনে ও পিছনে ছিল দু’টি এসকর্ট গাড়ি, যাতে একে ফর্টি সেভেন নিয়ে ছিলেন কলকাতা পুলিশের কমান্ডোরা।

লাল টি শার্ট ও নীল জিনস পরা আফতাব নিজেই প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে হাসপাতালে ঢোকে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অব অপথ্যালমোলজি ভবনের তিন তলায়। সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আফতাবের বাঁ চোখের ছানি কাটা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, অস্ত্রোপচারের পর চেকআপ করাতে আফতাবকে হাসপাতালে যেতে হবে না, তাকে দেখতে জেলে চিকিৎসকেরা যাবেন।

এ দিন যতক্ষণ অস্ত্রোপচার চলে, ততক্ষণ চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীরা ছাড়া কাউকেই ওই বিভাগে যাওয়ার ছাড়পত্র দেয়নি পুলিশ। এমনকী, ওই চিকিৎসক ও কর্মীদেরও গোয়েন্দাদের খবর জঙ্গিরা, বিশেষত ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন আফতাবকে জেল থেকে ছিনিয়ে নিতে মরিয়া।

খাদিমকর্তা অপহরণ মামলায় আফতাবের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারের সামনে জঙ্গি হামলায় দোষী সাব্যস্ত আফতাবকে কলকাতা হাইকোর্ট ফাঁসির আদেশও দিয়েছিল। তবে আফতাব আবেদন করায় সুপ্রিম কোর্ট তার ফাঁসির বদলে আমৃত্যু কারাবাসের আদেশ দিয়েছে।

আলিপুর জেলের ১ নম্বর সেল এখন চল্লিশোর্ধ্ব আফতাবের ঠিকানা। প্রথমে ঠিক ছিল, গত বছর অগস্টে আফতাবের ছানি কাটানো হবে জেলের বাইরে কোনও সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সে বার অপারেশন হয়নি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তখন আফতাবের ডায়াবিটিস এতটাই বেশি ছিল যে, কিছু দিন অপেক্ষা করতে হয়।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি বাইরে থেকে ডাক্তারেরা জেলে গিয়ে আফতাবের শারীরিক অবস্থা খুঁটিয়ে দেখার পরেই ঠিক হয়, এ বার অপারেশন করা হবে। কিন্তু জেলের হাসপাতালে ওই অপারেশন কেন করা হল না?

পুলিশ ও কারা দফতর সূত্রের খবর, জেল হাসপাতালের যা পরিকাঠামো, তাতে আফতাবের মতো হাই প্রোফাইল আসামির চোখের অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি থেকে যায়। ওখানে চোখে সংক্রমণ হতে পারে। কারা দফতর সূত্রের খবর, অস্ত্রোপচারের পরে এ দিনই আফতাবকে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে তাকে রাখা হয়েছে ১ নম্বর সেলেই। তার অস্ত্রোপচার পরবর্তী যাবতীয় চিকিৎসা ওখানেই হবে বলে জানিয়েছেন কারা দফতরের কর্তারা।

Aftab Ansari eye operation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy