প্রতীকী ছবি।
হন্তদন্ত হয়ে থানায় ঢুকলেন এক তরুণী। চোখে-মুখে উত্কণ্ঠার ছাপ। ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে সটান বললেন, “বিষ খেয়েছি। ওঁকে ছাড়া বাঁচব না। বিয়ে করলে ওঁকেই করব!” বলেন কী? তরুণীর মুখে এমন কথা শুনে থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। সাত-পাঁচ না ভেবে তরুণীকে নিয়ে তিনি সোজা ছুটলেন হাসপাতালে। বর্তমানে ওই তরুণী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত বলে জানিয়েছেনন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চন্দ্রকোনা থানার পিয়ারডাঙা গ্রামের ঘটনা। স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে নিয়ে ওই গ্রামেই থাকেন পেশায় দিনমজুর উত্তম বাগ। বড় মেয়ের বয়স বছর কুড়ি। তিনি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ওই তরুণী পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, জ্যাঠতুতো দিদির দেওরের সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তাঁর। প্রেমিকের বাড়ি চন্দ্রকোনা থানারই পিংলাশ ভাতাড়া গ্রামে। দুই পরিবারের লোকজন তাদের সম্পর্কের কথা জানত। তরুণীর অভিযোগ, “তাঁর পরিবার ও প্রেমিক রাজি থাকলেও, বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল প্রেমিকের বাবা-মা।’’ আরও অভিযোগ, প্রেমিকের বাবা মাকে মদত দিচ্ছে তাঁরই দাদা বৌদি। প্রেমিকের সঙ্গে অনেক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি। তরুণীর কথায়, “আমি ওকে বিয়ে করতে চাই, আমরা দু’জনেই সাবালক।” প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়েই বিষ খেয়েছিলেন বলে পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশকে ওই তরুণী জানান, শনিবার সকালে রেশন আনতে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বিষের বোতল। রাস্তাতেই সেটা খেয়ে নেন। তার পরই সোজা থানায় এসে হাজির হন। এ ছাড়া তার হাতে কোনও উপায় ছিল বলেও জানিয়েছেন তরুণী। এই ঘটনায় গোটা গ্রামে শোরগোল পড়ে যায়। মেয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে সেটা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তরুণীর বাবা-মা। তাঁরা বলেন, “ছেলের বাড়ি চাইলে আমরা চার হাত এক করে দিতে ইচ্ছুক।” পাশাপাশি দাবি করেন, ওঁদের দু’জনের সম্পর্কের কথা জানার পর ঘটনা ছেলেটিকে বলেছিলেন প্রয়োজনে খরচ দিয়ে দু’জনের রেজিস্ট্রি করে দেবেন। কিন্তু ছেলে ও তাঁর পরিবার তাতে কোনও সম্মতি দেয়নি। দিনমজুরি করে কোনওক্রমে সংসার চালান উত্তম। তিনি বলেন, “ছেলেমেয়েকে পড়াশোনাও করাচ্ছি। তার উপর এ সব নিয়ে ভেবে আর কুল পাচ্ছি না। পুলিশই এখন ভরসা।”
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: জঙ্গিদের হাতে অত্যাধুনিক মার্কিনি রাইফেল! জইশ-পাক সেনা আঁতাত স্পষ্ট, দাবি ভারতীয়
চন্দ্রকোনা থানার এক পুলিশকর্মী জানান, এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ একটি মেয়ে হঠাৎই থানায় ঢুকে বলে, বিষ খেয়েছি। প্রেমিক ফোন তোলেনি, আপনারা ব্যবস্থা করুন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমেই ওই তরুণীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি, সুস্থও আছেন।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তরুণীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে এবং বয়স সম্পর্কিত তথ্য যাচাই করে ওই যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy