Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
দেওয়া হচ্ছে জাল রসিদ

পুলিশ সেজে রাস্তায় তোলাবাজি

রাত হলেই রাজ্য ও জাতীয় সড়কের কোনও জায়গায় হঠাৎ করে হানা দিচ্ছে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। সঙ্গে পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৩
Share: Save:

চোরের উপরে নয়, এই বাটপাড়ি একেবারে প্রশাসনের উপরে।

রাত হলেই রাজ্য ও জাতীয় সড়কের কোনও জায়গায় হঠাৎ করে হানা দিচ্ছে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। সঙ্গে পুলিশ। অতিরিক্ত মাল বোঝাই ট্রাক বা অনিয়মে চলা গাড়ি— ধরা পড়লে ছাড় নেই কারও। সঙ্গে সঙ্গেই বিশাল অঙ্কের জরিমানা করে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সরকারি রসিদ। এমন হানার খবর আসছিল পুলিশ ও পরিবহণ কর্তাদের কাছেও। এর পরেই জরিমানার রসিদ পরীক্ষা করে বোঝা যায়, সবটাই জাল। নকল অফিসার সেজে প্রতারণা চালাচ্ছে একটি চক্র। তাদের খোঁজেই এ বার ঘুম উড়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ-প্রশাসনের।

জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘কিছু দিন ধরেই এমন প্রতারণার খবর আসছিল। জরিমানার রসিদ পরীক্ষা করে দেখা যায় গোটাটাই জাল।’’

কিন্তু ওই চক্র এতটাই ধূর্ত যে, তাদের ধরতে গিয়ে বাস্তবিক অর্থেই নাকানি চোবানি খেতে হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনকে। কখনও বিধাননগর বা ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায় কখনও বারাসত বা বসিরহাট জেলা পুলিশ এলাকার সড়কে হানা দিচ্ছে ওই প্রতারকেরা। ফলে কমিশনারেট ও জেলা পুলিশের মধ্যে সমন্বয় করে তল্লাশি চালাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, অনেক সময় পরিবহণ দফতর বা ট্র্যাফিক পুলিশও গাড়ি তল্লাশি করে। অনেক জায়গায় তল্লাশির খবর পেয়েই হানা দিয়ে দেখা যাচ্ছে প্রতারক নয়, আসল অফিসারেরা রয়েছেন।

কী ভাবে ‘অপারেশন’ চালাচ্ছে দলটি?

সম্প্রতি সপরিবার একটি অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন এক ব্যবসায়ী। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে তাঁর গাড়িটিকে আটকে দাঁড়ায় একটি গাড়ি। সেই গাড়ির সামনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পরিবহণ দফতরের স্টিকার সাঁটা ছিল। চার ব্যাক্তি গাড়ি থেকে নেমে নিজেদের পরিবহণ ও পুলিশের অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চায়। ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমি মদ্যপান করেছিলাম। কিন্তু আমার গাড়ির চালক মদ্যপান করেননি। তবুও আমি কেন মদ্যপান করে গাড়িতে রয়েছি সে জন্য জোর করে জরিমানা করা হয়। পরে জরিমানার কাগজ নিয়ে পরিবহণ দফতরে অভিযোগ জানাতে গিয়ে বুঝি প্রতারিত হয়েছি।’’ সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘নানা অছিলায় চক্রটি তোলাবাজি করছে। ওই চক্রে বিভিন্ন জেলার দুষ্কৃতী রয়েছে।’’ শুধু তাই নয়, যে গাড়িটি নিয়ে ওই চক্রটি দুষ্কর্ম চালাচ্ছে তার নম্বর প্লেটটিও জাল। সম্প্রতি পুলিশ ওই গাড়িটির একটি নম্বর পায়। কিন্তু দেখা যায়, ওই নম্বরে এক মহিলার গাড়ি রয়েছে। ইতিমধ্যে চক্রটির খোঁজে বর্ধমান, বসিরহাটের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু এখনও ধরা পড়েনি কেউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake Police Extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE