E-Paper

ভারতের প্রত্যাঘাত, উরি-পুলওয়ামায় নিহত জওয়ানদের পরিবারের কুর্নিশ

কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় সন্তান হারানোর যন্ত্রণা ছ’বছর ধরে বইছে এ রাজ্যের নিহত দুই জওয়ানের পরিবার। আরও একটি পরিবার একই শোক বহন করছে আট বছর ধরে।

নুরুল আবসার , সাগর হালদার  

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৫ ০৯:৩৩
ভালবাসার দিবস লাল হয়েছিল ভারতীয় সেনার রক্তে।

ভালবাসার দিবস লাল হয়েছিল ভারতীয় সেনার রক্তে। —ফাইল চিত্র।

ভারতের প্রত্যাঘাতকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ওঁরা সকলেই। তবে অবাক করলেন মিতা সাঁতরা!

কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় সন্তান হারানোর যন্ত্রণা ছ’বছর ধরে বইছে এ রাজ্যের নিহত দুই জওয়ানের পরিবার। আরও একটি পরিবার একই শোক বহন করছে আট বছর ধরে। কিন্তু পহেলগামের জঙ্গি হানায় ওই পরিবারগুলি যেন আরও বেশি বিচলিত! কারণ, এ বার খুন হয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। কেউ নিরাপত্তা রক্ষার ‘ডিউটি’-তে ছিলেন না।

২০১৯-এর ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মধ্যে ছিলেন হাওড়ার বাউড়িয়ার চককাশীর বাসিন্দা বাবলু সাঁতরা। সারা দেশের নানা প্রান্ত থেকে যখন প্রতিবাদে যুদ্ধের কথা উঠছিল, তখন চমকে দিয়ে বাবলুর স্ত্রী মিতা বলেছিলেন, ‘‘যুদ্ধ সমাধান হতে পারে না।’’ এ বার ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে সেই মিতাই বলছেন, ‘‘আমি বরাবরই শান্তির পক্ষে। কিন্তু শান্তির ডাককে ক্ষেত্র বিশেষে শিথিল করতে হয়। পহেলগামে যা হয়েছে, সে জন্য কোনও নিন্দাই যথেষ্ট নয়। ভারতীয় সেনার অভিযানকে কুর্নিশ জানাই। নিরীহ মানুষকে যারা মেরেছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি দরকার। জঙ্গিরা সাধারণত সামরিক বাহিনী বা পুলিশকে আক্রমণ করে। এ ক্ষেত্রে
তা হয়নি।’’

মিতা এখন আর চককাশীতে থাকেন না। মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার পড়াশোনার সুবিধার জন্য থাকেন বাবা-মায়ের বাড়িতে, হুগলির উত্তরপাড়ায়। সেখানে তিনি চাকরিও করেন। শাশুড়ি বনমালাও ছেলের স্মৃতি আঁকড়ে দিন যাপন করছেন। তিনিও বলেন, ‘‘পহেলগামে নিরীহ মানুষকে খুন করা দেখে শিউরে উঠেছি। এর একটা বিহিতও চেয়েছি। সেনা অভিযানে আমি খুশি।’’

ওই জঙ্গি হানাতেই প্রাণ গিয়েছিল নদিয়ার পলাশিপাড়া থানার হাঁসপুকুরিয়ার সিআরপিএফ জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের। পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার আক্রমণের খবর পেয়ে তাঁর বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাস বলেন, “যারা আমাদের ক্ষতি করছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতেই হবে। এ ছাড়া, পথ নেই।”

এর আগে, ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের উরির সেনা ছাউনিতে হামলা চালিয়েছিল পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা। নিহত হন হাওড়ারই জগৎবল্লভপুরের যমুনাবালিয়া গ্রামের গঙ্গাধর দলুই-সহ ১৯ জন জওয়ান। গঙ্গাধর বিহার রেজিমেন্টের সদস্য ছিলেন। ছেলের স্মৃতি বুকে আগলে দিন কাটাচ্ছেন বাবা ওঙ্কারনাথ। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে জঙ্গিরা যে ভাবে মেরেছে, তার যন্ত্রণা আমি বুঝি। এ বার নিরীহ পর্যটকদেরও ওরা ছাড়ল না। এ বারের সেনা অভিযানে আমার পুত্র হারানোর যন্ত্রণার উপশম হয়েছে।’’

যমুনাবালিয়া থেকে কিছু দূরে নতুন বাড়ি তৈরি করেছেন ওঙ্কারনাথ। সেখানেই থাকেন। বাড়ির নাম দিয়েছেন ‘শহিদ গঙ্গাধর ভবন’।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Terror Attack Uri Pulwama Attack

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy