ছেলেদের পুজোর সাজ মানে নতুন কিছু টি-শার্ট আর ডেনিম। কিংবা বড়জোর নতুন পাঞ্জাবি। এই ধারণা এখন অনেক পুরনো। চারদিকের শপিং মল আর দোকানগুলো দেখলেই বোঝা যায় ছেলেদের ফ্যাশনেও এখন ঢুকে পড়েছে প্রচুর বিকল্প। এ বার কোন ট্রেন্ডগুলো ‘ইন’, জেনে নিন চটপট।
এথনিক পোশাকে বাজিমাত
ফর্ম্যাল পোশাক বা ক্যাজুয়াল টি-শার্ট আর ডেনিম তো সারা বছরই পরা হয়। পুজোর দিনগুলো একটু এথনিক কিছু গায়ে চড়ালে মন্দ লাগবে না। তবে সনাতনী সাজ মানেই একঘেয়ে পাঞ্জাবি নয়। শর্ট আফগানি স্টাইলের কুর্তার সঙ্গে স্টিচ্ড ধোতি প্যান্টস্ পরতে পারেন। এগুলো আলাদা করে সামলানোর ঝক্কি নেই। বন্ধগলার সঙ্গে চুড়িদারও ভাল দেখাবে। তবে এই মুহূর্তে বাজারে সবচেয়ে বেশি চলছে কুর্তা আর মোদী জ্যাকেট। তা বলে গোটা পোশাক জুড়ে নিজের নাম লেখানোর দরকার নেই! ছিমছাম পাঞ্জাবির উপর খাদি জ্যাকেট চলতেই পারে। দোকানের রেডিমেড জ্যাকেটগুলোর ফিটিং পছন্দ না হলে খাদির দোকান থেকে কাপড় কিনে পাড়ার দরজিকে দিয়ে বানিয়ে ফেলুন। কারণ, ঠিকমতো ফিট না করলে এগুলো মোটেই ভাল দেখায় না। একটু জমকালো সাজের জন্য পাঞ্জাবির উপর লেয়ার করে পরতে পারেন লং জ্যাকেটও। কনট্রাস্ট রঙের পরলে দারুণ দেখাবে। উৎসবের দিনগুলোয় ছেলেরা রঙের ক্ষেত্রে একটু সাহসী হয়ে উঠতেই পারেন। শুধু প্যাস্টেল শেডের দিকে না গিয়ে বেগুনি, ওয়াইন, পেস্তা সবুজ বা অ্যাকোয়া ব্লুয়ের মতো রং পরে দেখুন। র’ সিল্কের একরঙা পাঞ্জাবির পাশাপাশি কিছু তসরের উপর হ্যান্ড পেন্টেড বা মধুবনী কাজ করা পাঞ্জাবিও কিনে ফেলতে পারেন। যা পুজো ছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানে পরার ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারবেন। জামদানি মানেই কিন্তু শাড়ি নয়। অনেক ডিজাইনার এখন ছেলেদের পোশাকেও জামদানি কাজ ব্যবহার করছেন। পুজোর আগে কলকাতার নানা জায়গায় পোশাক-আশাকের প্রদর্শনী হয়ে থাকে। একটু খবর রাখলেই এই ধরনের ডিজাইনার পোশাক পেয়ে যাবেন। যাঁরা আর একটু সাহসী, তাঁরা ফ্লোরাল মোটিফের পোশাকও ট্রাই করতে পারেন।
কুল ক্যাজুয়াল
নেহাতই ক্যাজুয়াল পোশাক পরতে চাইলে একটা ভাল ফিটেড ডেনিম অবশ্যই রাখবেন শপিং লিস্টে। অবশ্য মজাদার মেসেজ দেওয়া টি-শার্টও এখন খুব চলছে। অনলাইনে বিভিন্ন সাইট ঘাঁটলেই পছন্দসই টি-শার্ট পেয়ে যাবেন। প্রিয় সুপারহিরো বা টিভি সিরিজের কোনও চরিত্রের অনুকরণে ডিজিটাল প্রিন্টেড গ্রাফিক টি-শার্টও পাওয়া যায়। টি-শার্টের সঙ্গে ক্যাজুয়াল ব্লেজার লেয়ার করে পরুন। বাজারে এখন অনেক রকম জ্যাকেট উঠেছে। ক্যারি করতে পারলে একটু মজাদার প্রিন্টেড জ্যাকেটও কিনতে পারেন। স্ট্রেট কাট ট্রাউজার্সের বদলে বেছে নিন রঙবেরঙের ‘চিনো প্যান্টস’। একটু লং শার্টের সঙ্গে যোধপুরি প্যান্টস্ও দারুণ দেখায়। ক্যানভাস কাপড়ের প্যান্টস্ এখন রমমিয়ে চলছে। এগুলোয় চট করে ভাঁজও পড়ে না। তাই নিয়মিত ব্যবহারের জন্য আদর্শ। একঘেয়ে কালো, ধূসর ও বাদামি ছেড়ে এ বার পুজোয় মাস্টার্ড ইয়েলো, অলিভ গ্রিন, প্লাম, মিন্ট ব্লুয়ের মতো রং ট্রাই করুন। ক্যারি করতে পারলে দিব্য দেখাবে!
অ্যাকসেসরিই শেষ কথা
ছেলেরা সাধারণত অ্যাকসেসরির ক্ষেত্রে খুব একটা নজর দেয় না। স্মার্ট পোশাকের সঙ্গে ভুলভাল অ্যাকসেসরি পরলে কিন্তু পুরো সাজটাই মাঠে মারা যাবে। ছেলেদের সাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকসেসরি— জুতো। এথনিক পোশাকের সঙ্গে মানানসই কোলাপুরি চপ্পল পরতে পারেন। নাগরাই জুতোও ভাল লাগে। তবে, পুজের ভিড় ঠেলে অনেক হাঁটতে হলে একটু আরামদায়ক জুতো পরাই ভাল। ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে ‘অক্সফোর্ড শ্যু’ বা ‘সেলর শ্যু’ পরতে পারেন। নানা রকম প্রিন্টের ক্যানভাস জুতোও মানিয়ে যাবে আপনার ক্যাজুয়াল লুকের সঙ্গে। তবে, শার্ট আর ট্রাউজার পরলে অবশ্যই বেল্টের দিকে বাড়তি নজর দেবেন। একটু খরচ করে ভাল ব্র্যান্ডের বেল্ট কিনলে বহু দিন কাজে দেবে। তা ছাড়া চশমা কিংবা গগল্স কেনার সময়ও একটু এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন। এখন অনলাইনে অনেক ধরনের প্রিন্টেড ফ্রেমের গগল্স ও চশমা পাওয়া যায়। নিজের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী তার মধ্যে থেকে বেছে নিন। শৌখিন ছেলেরা ভাল স্কার্ফ বা হ্যাটও রাখতে পারেন পুজোর সাজে। কলকাতার পরিচিত ডিজাইনার অভিষেক দত্ত বলছেন, ‘‘এ বার পুজোয় পোশাকের মধ্যে জহর জ্যাকেট, অঙ্গারখাঁ কুর্তা, ধোতি প্যান্ট খুবই ‘ইন ট্রেন্ড’। রংয়ের ক্ষেত্রে আমার বেশি পছন্দ আকাশি। তবে, ‘রাস্ট গ্রিন’ বা ‘মস গ্রিন’-এর মতো সবুজের কয়েকটি শেডও যে কাউকেই মানিয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy