‘বাবা হয়ে নিজের মেয়েকে চিনতে পারব না’— গত রবিবার মর্গে এক তরুণীর দেহ দেখে বড় মুখ করেই পুলিশকে কথাটা বলেছিলেন দাসপুরের সুনীল দোলই। দেহ শনাক্ত করে সৎকারও করে ফেলেছিলেন।
তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাড়িতে হাজির মাম্পি দোলই, যে মেয়েকে ‘মৃত’ ভেবে দাহ করেছেন সুনীলবাবু ও তাঁর পরিজনেরা। মেয়ে ঘরে ফেরায় হাঁফ ছেড়েছেন বছর পঁয়তাল্লিশের সুনীলবাবু। কিন্তু তা ছাপিয়ে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে অন্যের মেয়ের দেহ দাহ করার অপরাধবোধ। বৃহস্পতিবার তাঁর আক্ষেপ, “দেহটা আরও ভাল করে দেখা উচিত ছিল। যাঁদের মেয়েকে দাহ করলাম, তাঁরা এ বার কিছু জানতে চাইলে কী জবাব দেব!”
৮ অগস্ট বছর পনেরোর মাম্পি নিখোঁজ হয়। থানা-পুলিশ করেও হদিস মেলেনি। ২০ তারিখ দিঘায় অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর দেহ মেলে। সেই ছবি খবরের কাগজে দেখেই দিঘা যান সুনীলবাবু। কারণ, ছবিতে যে মেয়ের আদল। ২১ অগস্ট কাঁথি হাসপাতালের মর্গে ‘মেয়ের দেহ’ শনাক্ত করেন তিনি। সোমবার হয় সৎকার। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার কৈখালি থেকে পুলিশ মাম্পিকে উদ্ধার করে। সে নিখোঁজ হওয়ার দিনই টুম্পা পাল নামে এক তরুণীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে দেবু পাল, বাচ্চু আলি, সাহেব আলি নামে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা সকলেই জেল হেফাজতে। বাচ্চুর সঙ্গে মাম্পির সম্পর্ক রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। তবে বাচ্চুর সঙ্গেই সে চলে গিয়েছিল কি না তা স্পষ্ট নয়। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় মাম্পি জানিয়েছে, সে নিজের ইচ্ছেতেই বাড়ি ছেড়ে গিয়েছিল। তবে বাকিদের সঙ্গে ঘটনার সম্পর্ক জানতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।