Advertisement
০১ মে ২০২৪

কুপ্রস্তাবে না, বধূকে খুনের অভিযোগে ধৃত শ্বশুর

কেতুগ্রামের বধূটি বাঁচতে পারেননি। বসিরহাটের তরুণী বধূও বাঁচতে পারলেন না। কুপ্রস্তাবে আপত্তি জানানোয় ন’বছর আগে গায়ে কেরোসিন ঢেলে কেতুগ্রামের এক বধূকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৫৯
Share: Save:

কেতুগ্রামের বধূটি বাঁচতে পারেননি।

বসিরহাটের তরুণী বধূও বাঁচতে পারলেন না।

কুপ্রস্তাবে আপত্তি জানানোয় ন’বছর আগে গায়ে কেরোসিন ঢেলে কেতুগ্রামের এক বধূকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।

শনিবার দুপুরে বাড়ির বাথরুমে বসিরহাটের বছর আঠারোর এক বধূকেও হাত পিছমোড়া করে বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও প্রাণে বাঁচেননি তিনি। তাঁরও ‘অপরাধ’ একই— ষাটোর্ধ্ব শ্বশুরের কুপ্রস্তাবে রাজি হননি। তাঁকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগে রবিবার বিকেলে শ্বশুরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাবার ‘কীর্তি’তে লজ্জায় মুখ ঢেকেছেন বধূটির স্বামী। তিনি বলেন, ‘‘বাবা যে এমন একটা কাণ্ড করে বসবে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।’’

কেতুগ্রামের বছর কুড়ির ওই বধূর সঙ্গে বসিরহাটের বিবিপুরের তরুণী বধূর মিল এক জায়গাতেই। দু’জনেই শ্বশুরের কুকর্মের প্রতিবাদ করতে ভয় পাননি। শনিবার দুপুরে বসিরহাটের বধূটির গায়ে যখন আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়, তখন ঘরে তাঁর শ্বশুর ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। কাজ সেরে ফেরার সময়ে বাড়ির বাথরুমে আগুন জ্বলতে দেখে বধূর স্বামী দৌড়ে ঘরে ঢোকেন। তিনিই স্ত্রীকে উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যান। গভীর রাতে বধূটি মারা যান। তাঁর দাদুর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই বধূর শ্বশুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বসিরহাটের আইসি গৌতম মিত্র জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বধূর শ্বশুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে বসিরহাটের মির্জানগর গ্রামের ওই তরুণীর বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বধূটির শাশুড়ি অনেক দিন আগেই মারা গিয়েছেন। অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে ছেলে কাজে বেরিয়ে গেলেই তাঁর বাবা পুত্রবধূর ঘরে ঢুকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন এবং রাজি না হওয়ায় মারধর করছিলেন। বধূটি পড়শিদের এবং স্বামীকে ঘটনার কথা জানান।

কেতুগ্রামের বধূটি পাশে পেয়েছিলেন শাশুড়িকে। বসিরহাটের বধূটি পাশে পান স্বামী এবং পড়শিদের। বাবার কুকর্মে আপত্তি জানাতে থাকেন ছেলেও। এ নিয়ে দু’জনের অশান্তিও চলছিল। পড়শিরাও সালিশি বসিয়ে ওই প্রৌঢ়কে সাবধান করে দেন। কিন্তু প্রৌঢ় পুত্রবধূকে কুপ্রস্তাব দেওয়া বন্ধ করেননি এবং শুক্রবারেও মারধর করেন বলে অভিযোগ। তার পরে ওই ঘটনা। বধূটির এক আত্মীয় বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা ও সব কথা বিশ্বাস করিনি। পরে জানতে পারি, মেয়েটা সত্যি কথাই বলছে।’’ বধূর দাদু বলেন, ‘‘কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার জন্যই নাতনির হাত বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেয় তার শ্বশুর।’’ সকলে ধৃতের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Father murder ketugram basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE