Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মধ্যরাতে ভূতের ভয় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে

মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ আচমকা সেই আওয়াজ শুনে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে ভেবেছিলেন, হয় কেউ ঘরে আটকে পড়েছেন অথবা জানলা দিয়ে কোনও জন্তু ঢুকেছে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার সবই বাইরে থেকে তালা দেওয়া। তত ক্ষণে শব্দও বেড়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৪৬
Share: Save:

ভরা ভাদ্র। মেঘাচ্ছন্ন মাঝ রাত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ নিঃঝুম। হঠাৎ পদার্থ বিদ্যা বিভাগের দোতলার ঘর থেকে ধুপধাপ শব্দ।

মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ আচমকা সেই আওয়াজ শুনে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে ভেবেছিলেন, হয় কেউ ঘরে আটকে পড়েছেন অথবা জানলা দিয়ে কোনও জন্তু ঢুকেছে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার সবই বাইরে থেকে তালা দেওয়া। তত ক্ষণে শব্দও বেড়েছে। ভেসে আসছে দরজা, জানলা, চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ও কাচ ভাঙার আওয়াজ। চার নিরাপত্তা রক্ষী অভিনন্দন দাস, নারায়ণ সাহা, মঙ্গল মাঝি ও দেবজ্যোতি চক্রবর্তী জানান, ঘরে আসবাব সরালে যেমন আওয়াজ হয়, তেমনটাও শুনেছেন তাঁরা।

তাতেই ভয় বাড়ে। কেউ আটকে পড়লে বা জানলা দিয়ে জন্তু ঢুকে পড়লে, এমনটা হওয়ার কথা নয়। তার পরে ডাকলে কেউ সাড়াও দিচ্ছে না। ভূতের উপদ্রব নয় তো?

কিছু দিন আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূতের গুজব ছড়িয়েছিল। তাই রায়গঞ্জে নিরাপত্তা রক্ষীরা আর দেরি না করে খবর দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। খবর পান এস্টেট অফিসার স্বপনকুমার পাইন। তিনি চাবি আনান। রাত ১টা নাগাদ ক্লাসঘর, ল্যাবরেটরি খুলে দেখা যায়, সব যেমন থাকার কথা তেমনই রয়েছে। এক চুলও নড়েনি। কাচ থেকে কাঠ সবই অটুট। রাত তখন আরও বেড়েছে। তার মধ্যেই তাই ভূতের গল্প গাঢ় হতে থাকে।

সকালে কিন্তু ভূত ফিকে হতে শুরু করেছে। বুধবার ইদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল। দুপুরে উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি, রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার এবং কয়েক জন অধ্যাপক ও শিক্ষক পদার্থবিদ্যা বিভাগের ঘরগুলোয় যান। উপাচার্যের দাবি, ‘‘মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে পদার্থবিদ্যা বিভাগের ভিতর থেকে নানা রকম শব্দ ভেসে এসেছিল। কিন্তু সেই শব্দের উৎস সম্পর্কে আমরা কিছু বুঝতে পারছি না।’’ তবে ওই ঘরগুলোতে ২৯ অগস্ট থেকে সন্ধেবেলার অনার্স ও পাসের ক্লাস শুরু হতে চলেছে। তার জন্য ভর্তি প্রক্রিয়াও চলছে। তবে তা ভেস্তে দেওয়ার মতলবে কেউ এমন করতে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছেন না।

কেউ কেউ অনুমান করছেন, নিছক দুষ্টুমিই করা হয়েছে। ওই ঘরগুলোর পিছনে ফাঁকা জমি-জঙ্গল। সেখানে লুকিয়ে কেউ ওই ঘরে ছোট্ট কিন্তু শক্তিশালী হ্যান্ডমাইক বা সাউন্ড বক্সের সাহায্যে আওয়াজ করতে পারে। যা পরে তার ধরে টেনে নামিয়ে নেওয়া যায়। ওই ঘরের সামনে সিসি ক্যামেরা থাকলেও তা বিকল। তাই বিকেলে কে কে ওই ঘরে ঢুকেছিলেন, তা বোঝার উপায় নেই। উপাচার্য বলেন, ‘‘বিকল সিসি ক্যামেরা সারানো হবে। জোরালো আলোরও ব্যবস্থা হচ্ছে।’’ পুলিশও জানায়, নজরদারি বাড়ানো হবে। দুর্লভবাবু জানিয়েছেন, ‘‘কী ঘটেছে তার তদন্ত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE