Advertisement
E-Paper

নৌকাডুবিতে নিখোঁজ বহু, অগ্নিগর্ভ কালনা-শান্তিপুর, শূন্যে গুলি পুলিশের

নৌকাডুবিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নদিয়ার শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ফেরিঘাট। উত্তেজিত জনতা পুড়িয়ে দেয় ঘাটে বাঁধা ফেরি পারাপারের ৬টি নৌকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ১০:১৮
শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাটে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নৌকা। নিজস্ব চিত্র।

শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাটে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নৌকা। নিজস্ব চিত্র।

নৌকাডুবিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নদিয়ার শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ফেরিঘাট। উত্তেজিত জনতা পুড়িয়ে দেয় ঘাটে বাঁধা ফেরি পারাপারের ৬টি নৌকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় শান্তিপুর থানার এক সাব ইন্সপেক্টরের। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। এমনকী শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত বড় ঘটনা ঘটে গেল অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। উদ্ধারকাজে চরম গাফলতিরও অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। শনিবার শান্তিপুর যাওয়ার সময় কালনার চেরিঘাটে একটি যাত্রিবাঝাই নৌকা ডুবে যায়। নিখোঁজ হয়ে যান বহু যাত্রী। অন্ধকার থাকায় রাতে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে প্রশাসন। রবিবার সকাল হতেই ডুবুরি ও উদ্ধারকারী দল এসে পৌঁছয়। দুর্ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও উদ্ধারকাজের জন্য কেন ব্যবস্থা নিল না প্রশাসন তা নিয়ে এ দিন ক্ষোভ উগরে দেন যাত্রীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কালনার চেরিঘাটে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা পৌঁছন। তাঁদের দেখে আরও ক্ষেপে যান যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার দিন পুলিশ ফেরিঘাটে থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অন্য দিকে, একই অভিযোগে শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ফেরিঘাটে নৌকা ভাঙচুর এবং আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।

ঠিক কী হয়েছিল?

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ শনিবারে ভবা পাগলার ভবানী মন্দিরে বাত্সরিক উত্সব হয়। এই উত্সবকে কেন্দ্র করে ওই দিন হাজার হাজার মানুষ নদিয়া থেকে খেয়া পারাপার করে কালনায় আসেন। কালনার চেরিঘাটের ওপারে রয়েছে শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাট। এই দুই ঘাটের মাধ্যমেই খেয়া পারাপার করে ভবা পাগলার উত্সবে যোগ দিতে আসেন পূণ্যার্থীরা। শনিবারেও এই উপলক্ষে সকালে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। সারা দিন উত্সবে কাটিয়ে সন্ধেবেলায় বাড়ি ফেরার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। রাত ৮টা নাগাদ ঝড়ের কারণে খেয়া পারাপার প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ রাখা হয়। রাত ১১ নাগাদ ফের খেয়া পারাপার চালু হয়। কালনার চেরিঘাটে একটি নৌকো ভিড়তেই প্রায় দু’শো মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকায় ওঠার জন্য। সাধারণত ওই ভুটভুটি নৌকোগুলোতে ৬০-৭০ জন যাত্রী ধরে। এত সংখ্যক যাত্রী এক সঙ্গে ওঠার চেষ্টা করায় ভেঙে যায় নৌকাটি। তখনই বেশ কয়েক জন গঙ্গায় পড়ে যান। ঘাটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ এবং অন্যান্য লোকেরা কিছু যাত্রীকে টেনে তোলেন। কিন্তু কয়েক জন তলিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।


কালনার এই ঘাটে ডুবে যায় নৌকাটি।

এ রকম অবস্থায় ঘাটের কাছে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। রাতের অন্ধকারে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি। রবিবার সকালে ডুবুরি এবং উদ্ধারকারী দল আসে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ ও প্রশাসনিকের আধিকারিকরা। এরই মধ্যে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পূণ্যার্থীরা গণ্ডগোল শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশবাহিনী সেখানে আসে। এর মধ্যে একটি বার্জে করে যাত্রীদের শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বার্জটি সেখানে ভিড়তেই উত্তেজিত জনতা বার্জ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। ফের বার্জটি কালনায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। অন্য দিকে, নৃসিংহপুরে উত্তেজিত জনতা ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পুলিশ এসে পৌঁছলে উত্তেজিত জনতা তাদের আক্রমণ করে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন...

কোথায় তারা? সুন্দরবন চষে ফেলেও খোঁজ নেই

Ferry Kalna Shantipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy