Advertisement
E-Paper

চালকের তৎপরতায় বাঁচল হাতির পাল

অমরনাথ এবং তাঁর সহ চালক পবন কুমারকে  পুরস্কৃত করবেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। অমরনাথ কিন্তু বলছেন, ‘‘আমি তো বিশেষ কিছু করিনি। নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। ওখানে হাতি দেখলে থেমে যাওয়ারই তো কথা।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১২
এ ভাবেই লাইন পার হচ্ছিল হাতির দল। ছবি রেলের সৌজন্যে।

এ ভাবেই লাইন পার হচ্ছিল হাতির দল। ছবি রেলের সৌজন্যে।

বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সেবক স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়েন অমরনাথ ভগত। মিনিট পাঁচেক পরে হঠাৎ দেখেন সাত-আটটি হাতি বাচ্চাদের নিয়ে লাইন পেরোচ্ছে। ট্রেনের গতি তখন ঘণ্টায় ত্রিশ কিলোমিটার। সঙ্গে সঙ্গে এমার্জেন্সি ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন অমরনাথ। হাতির দল লাইন পেরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যাওয়ার পরে ট্রেন ছাড়েন। পরের স্টেশন গুলমা পৌঁছন ১০ মিনিট দেরিতে।

অমরনাথ এবং তাঁর সহ চালক পবন কুমারকে পুরস্কৃত করবেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। অমরনাথ কিন্তু বলছেন, ‘‘আমি তো বিশেষ কিছু করিনি। নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। ওখানে হাতি দেখলে থেমে যাওয়ারই তো কথা।’’ পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, অমরনাথ যা করেছেন সেটাই করা উচিত, কিন্তু এই নিয়মটাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানা হয় না বলে রেলে কাটা পড়ে এত হাতির মৃত্যু হয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এই লাইনে ট্রেনের ধাক্কায় বাহাত্তরটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শিলিগুড়ি জংশন পর্যন্ত রেলপথের অধিকাংশ জঙ্গল। তা ছাড়া, চা বাগান ও বনবস্তি রয়েছে। এই এলাকাগুলো দিয়ে বন্যপ্রাণী যাতায়াত করে।
গত ৯ জুনই বানারহাটের কাছে একটি হাতি ও ৬ জুলাই ডায়না রেঞ্জের জঙ্গলের কাছে দু’টি হাতি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম চন্দ্রবীর রমণ জানান, ট্রেন চালকের তৎপরতায় শুক্রবার হাতিদের দলটি বেঁচে গিয়েছে। ডিআরএম জানান, ট্রেন চালকদের নিয়ে মাঝে মধ্যে সচেতনতা মূলক শিবির করা হয়। কী ভাবে জঙ্গলের পথে নজর
রাখবেন, তা নিয়ে আলোচনা হয়৷ সে জন্য মাঝেমধ্যেই এ ভাবে ট্রেন চালকদের তৎপরতায় বন্যপ্রাণকে বাঁচানো সম্ভব হয়।

অমরনাথ বলেন, ‘‘শুক্রবার বামনহাট শিলিগুড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেন নিয়ে সেবক স্টেশন ছেড়ে গুলমার দিকে যাচ্ছিলাম। প্রায় আড়াইশো মিটার দূর থেকে সহকারী চালক পবন কুমার হাতি দেখতে পান। হাতির পালটি রেল লাইনের ডান দিক থেকে বাঁ দিকে যাচ্ছিল। দলে সাত আটটি হাতি ও দুই-তিনটে শাবকও ছিল। পবন কুমারের কাছে তা শুনেই আমি ট্রেনের ব্রেক কষি৷” প্রায় একশো মিটার দূরে গিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়। পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘এই দুই চালকের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করলে অনেক বিপদ কাটবে।’’

Elephant Train Driver
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy